মায়ের ওপর ক্ষোভ থেকে শিশুসন্তানকে হত্যা

গাজীপুর মহানগরের বাসন এলাকায় শিশু সাখাওয়াত হোসেনকে (৬) হত্যার নয় দিন পর আসামি তাহারুল মিয়াকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিশুটির মায়ের ওপর ক্ষোভ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে আসামি। বুধবার (২২ মার্চ) গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ১৫ মার্চ বিকালে বাসন থানার ইসলামপুর এলাকা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) উপ-কমিশনার ইব্রাহিম খান তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন।

সাখাওয়াত রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড় হযরতপুর গ্রামের জাফর আলীর ছেলে। আসামি তাহারুল রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার জামালপুর গ্রামের ইয়াসিন আলীর ছেলে। গ্রেফতার তাহারুল ও ভিকটিম শিশু মহানগরের ভোগড়া পেয়ারাবাগান এলাকার মোবারক মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া।

গত ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় শিশু সাখাওয়াত তার বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন তার মা মহানগরের বাসন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে তার বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে মামলা করেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) উপ-কমিশনার ইব্রাহিম খান জানান, ১৫ মার্চ সন্ধ্যায় এলাকাবাসী মাটির নিচে চাপা দেওয়া শিশুর লাশের পা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। পরে ভিকটিমের মা-বাবা লাশ শনাক্ত করেন। জিএমপি অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অপরাধ) রেজওয়ান আহমেদের নেতৃত্বে ছয় দিন ধরে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে আসামি তাহারুলকে বুধবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাহারুল পুলিশকে জানায়, সে ভিকটিমের চাচাতো বোন শারমিনকে দুই বছর আগে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলতে থাকে। গত প্রায় আট মাস আগে শিশু সাখাওয়াতের পরিবার কাজের উদ্দেশ্যে গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন পেয়ারাবাগান এলাকায় বসবাস শুরু করে। আসামি তাহারুল মিয়া প্রায় একমাস আগে শারমিনকে নিয়ে সাখাওয়াতদের ভাড়াবাসার পাশের একটি রুম ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। সেখানে প্রায় এক মাস যাবৎ থেকে নির্মাণশ্রমিকের কাজ করছে। গত ১৩ মার্চ বিকালে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তাহারুলের সঙ্গে স্ত্রীর ঝগড়া হয়। এ সময় শিশু সাখাওয়াতের মা তাহারুলকে শাসন ও বকাঝকা করেন। এতে তাহারুল ক্ষিপ্ত হয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যান। এ সময় সে বাড়ির গেটের সামনে শিশু সাখাওয়াতকে পেয়ে দোকান থেকে মজা খাওয়ানোর কথা বলে ডেকে নেয়। শিশুটিকে সে মহানগরের ইসলামপুর এলাকার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের পশ্চিমে কবির হোসেনের সদ্য মাটি ভরাট করা ফাঁকা জমিতে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে সেখানে তাহারুলকে শ্বাসরোধে হত্যার পর মাটিচাপা দিয়ে চলে যায়।