ভুল অপারেশনে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতকের পেট কেটে ফেলায় মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সূর্যের হাসি ক্লিনিকে ঘটনাটি ঘটে। বুধবার সৈয়দপুর থানার ওসি জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।

এ ঘটনার ভুক্তভোগী প্রসূতির নাম চাঁদনী। তিনি পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচণ্ডি গ্রামের রওশন সরকার রাজুর স্ত্রী।

নবজাতকের মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়লে প্রসূতির পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ওই ক্লিনিকে জড়ো হলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হান ও থানার ওসি সাইফুল ইসলাম ওই ক্লিনিকে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

নবজাতকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রসূতির শরীরে অস্ত্রোপচার করেন ডা. নুরনাহার নার্গিস ও ডা. মিজানুর রহমান। এ সময় পরিবারের পক্ষে অভিয়োগ করা হয়, প্রসূতির অস্ত্রোপচারের সময় নবজাতকের পেট কেটে গেছে। পরে অসুস্থ নবজাতককে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেয় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।

নবজাতকের বাবা রওশন সরকার রাজু বলেন, ‘রাত ৮টায় রংপুর মেডিক্যালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান, এই শিশুকে বাঁচানো সম্ভব নয়। তাই তাকে নিয়ে রাতেই সূর্যের হাসি ক্লিনিকে ফেরত আসি। কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শিশুটির কোনও প্রকার চিকিৎসা প্রদান করেনি।’

সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) নাজমুল হুদা বলেন, ‘এটি গ্যাস্ট্রচিসিস নামক এক ধরনের রোগ। এ ধরনের রোগ নিয়ে শিশুটির জন্ম হতে পারে।’

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর থানার ওসি জানান, নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, ‘কী কারণে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে তা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাই বলতে পারবেন। তাই সিভিল সার্জনের নির্দেশে চিকিৎসকদের তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’