নাসিরনগরে বিনিময় প্রথার ব্যতিক্রমী শুঁটকি মেলা

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিনিময় প্রথার ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি মেলা। তবে শুঁটকিসহ পণ্যের দাম বেশি থাকায় মেলার ঐতিহ্যে ভাটা পড়েছে। ঐতিহ্য ধরে রাখতে কিছুক্ষণের জন্যে চলে বিনিময় প্রথা।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে সরজমিন কুলিকুন্ডা গ্রামের উত্তর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত শুঁটকি মেলায় গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি শোল, বোয়াল, গজার, টেংরা এবং পুঁটিসহ বিভিন্ন ধরনের শুঁটকি নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। দূরদুরান্ত থেকে আসা কয়েকশত দোকানি শুঁটকির পসরা সাজিয়ে বসেছেন। এদিকে শুঁটকি মেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের জমিতে বসেছে লৌকজ মেলা। মেলায় সার্বিক কেনাবেচা ভালো হওয়ায় খুশি দোকানিরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি মেলা। শুঁটকি দোকানি কৃষ্ণদাস বলেন, ‘পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় কমে গেছে ঐতিহ্যবাহী পণ্য বিনিময় প্রথা। অথচ এক বছর আগে এই প্রথা চালু ছিল। এখন নামে মাত্র এই প্রথা চালু আছে। তাই এ মেলার ঐতিহ্য হারিয়েছে।’

ক্রেতা মো. মহব্বত আলী বলেন, ‘প্রাচীনকালে যখন কাগজের মুদ্রা প্রচলন হয়নি ঠিক তখন থেকে কৃষকেরা তাদের সদ্য উৎপাদিত ফসলের বিনিময়ে কেনাবেচা করতেন। বিশেষ করে শুঁটকি ছিল তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য। তবে কালের বিবর্তনে এই মেলার জৌলস অনেকটাই হারিয়েছে। শুধু তাই নয় হারিয়েছে চিরচেনা বিনিময় প্রথাও। তারপরেও ঐতিহ্য ধরে রাখতে মেলায় শুটকি কেনার জন্যে এসেছি।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শুঁটকি মেলা। মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওহাব আলী বলেন, ‘বিনিময় প্রথার ঐতিহ্য ধরে রাখতে অল্প পরিসরে পণ্যবিনিময়রে মধ্যে দিয়ে শুঁটকি বিক্রি শুরু হয়। পরে চলে টাকার অর্থে বিক্রি।’ তিনি আরও জানান, মুঘল আমল থেকে ঐতিহ্যবাহী এ মেলা হয়ে আসছে। 

মোট চার একর জমিতে বসা মেলায় শুঁটকির দোকান ছাড়াও অন্তত ৩০০ দোকান বসেছে। দিনব্যাপী এ মেলায় অন্তত তিন কোটি টাকার পণ্য কেনাবেচা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।