কুড়িগ্রামে চার মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুর

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় চারটি পারিবারিক মন্দিরে হামলা চালিয়ে সাতটি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। সোমবার (১ মে) রাতে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমন্ডল সীমান্তের রায়পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেন, গোরকমন্ডল ক্যাম্পের বিজিবি সদস্য ও উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা।

ইউএনও সুমন দাস এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, রায়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ভবেশ চন্দ্র বর্মনের বাড়ির উঠানে হরিদেব মন্দির, বিনয় চন্দ্র বর্মনের বাড়ির উঠানে মনসা মন্দির, ধীরেন চন্দ্র বর্মনের বাড়ির উঠানে মহাদেব মন্দির ও বীরেন চন্দ্র বর্মনের বাড়ির উঠানে রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। রাতে চারটি মন্দিরের ভেতরে থাকা মোট সাতটি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে কে বা কারা প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত তা শনাক্ত করা যায়নি।

বীরেন চন্দ্র বর্মন জানান, তার বাড়ির উঠানে রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে গ্রামের সবাই পূজা করেন। গেল তিনযুগ ধরে তারা এ মন্দিরে পূজা-অর্চনা করে আসছেন। সোমবার সন্ধ্যায় তারা মন্দিরে প্রার্থনা করেছেন। মঙ্গলবার সকালে পূজার জন্য এসে দেখতে পান মন্দিরের ভেতর প্রতিমা ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে।

তিনি বলেন, ‘সম্ভবত মঙ্গলবার ভোররাতে কেউ এসে এসব প্রতিমা ভাঙচুর করেছে। এর আগে এই গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেনি। জড়িত দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

ভবেশ চন্দ্র বর্মন ও ধীরেন্দ্র নাথ বর্মন জানান, পরিকল্পিতভাবে একই রাতে গ্রামের চারটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিশেষত নারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এর প্রতিকার চান তারা।

বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ -খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ফুলবাড়ী উপজেলার সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র রায় বলেন, ‘হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে গ্রামে ঢুকে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। না হলে দুর্বৃত্তরা পুনরায় এ ধরনের অপরাধ ঘটাবে।’

ফুলবাড়ী থানার ওসি ফজলুর রহমান বলেন, ‘জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে এখনও কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি।’

ইউএনও সুমন দাস বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত ও গ্রেফতারে পুলিশ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’