রাঙামাটিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি ৩৫ হাজার মানুষ

রাঙামাটিতে পাহাড়ি ঢলে নতুন করে আরও অনেক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি ও বরকল উপজেলার নিম্নাঞ্চলে নতুন করে অনেক বাড়িঘর ডুবে গেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছে প্রশাসন।

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে সঠিক তথ্য ও ত্রাণ পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে। জেলায় ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্রে সাড়ে চার হাজার মানুষ অবস্থান করছে।

বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদে পানি প্রবেশ করেছে। কৃষি জমি ফসল নষ্ট হয়েছে। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে বন্যাদুর্গতরা। বাঘাইছড়ির প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার। তিনি জানান, উপজেলায় ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।

বাঘাইছড়ির মধ্যমপাড়ার বাসিন্দা মো. মোশারফ হোসেন ও কাইয়ুম হোসেন বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পাশেই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠি। সেখানে মানুষের গাদাগদি অবস্থা দেখে অন্যত্র চলে যাই। আমরা নিপারদ আশ্রয় নিতে পারলেও গরুগুলো ঘরের মধ্যে রেখে বের হয়েছি। রাত থেকে কোনও খাবার দিতে পারিনি গরুগুলোকে।

ইউএনও রুমানা আক্তার বলেন, ‘সকালে অফিসের নিচ তলায় পানি ঢুকে পড়ায় অফিসে যেতে পারছি না। উপজেলার পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ড এবং ৮টি ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছে তাদের জন্য খাবার রান্না করে দেওয়া হচ্ছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘যারা আশ্রয়কেন্দ্রে আসেনি। তাদের জন্য ১০ কেজি চাল, ৩ কেজি আলু, ১ লিটার সয়াবিন তেল, শুকনো খাবার ও মোমবাতিসহ তাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছানো শুরু করেছি। এই পর্যন্ত আমি ৪০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। প্রয়োজনের আরও বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।’

বরকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমা বিনতে আমিন বলেন, ‘বন্যায় ১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৫০ জন কেন্দ্রে অবস্থা করছেন। উপজেলায় বন্যায় ৩৫টি গ্রামে প্রায় ৮ হাজার ৪০০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যারা আশ্রয়কেন্দ্র এসেছে তাদের তিন বেলা খাবার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যারা আসেনি তাদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে চাল ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট
বিতরণ শুরু হয়েছে।’

টানা বর্ষণের ফলে বন্যা পরিস্থিতি সঙ্গে সঙ্গে দুর্গম উপজেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবহার অনেকটা বন্ধের পথে। এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক দুর্বল হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সরকারি নম্বর বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।