ড. ইউনূসের গ্রামের বাড়িতে পুলিশের আনাগোনা

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাটহাজারীর নজুমিয়াহাটের গ্রামের বাড়িতে পুলিশের আনাগোনা বেড়েছে। গত ৩১ আগস্ট স্থানীয় মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এক এএসআই তার গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানে আশপাশের বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ড. মুহাম্মদ ইউনুস সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। এর সপ্তাহ খানেক আগেও জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) এক এসআই তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ড. ইউনুসের ছোট ভাই মঈনুল এনাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

মঈনুল এনাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গ্রামের বাড়িতে আমরা কেউ থাকি না। সেখানে গত ৩১ আগস্ট পুলিশ গিয়েছিল। মদুনাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই আজম গিয়েছিলেন। তিনি সেখানে কাউকে না পেয়ে আমাকে ফোন করেছিলেন। প্রথমে আমার ভাই ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে জেনেছেন। তিনি কোথায় লেখাপড়া করেছেন, কোথায় থাকেন এসব বিষয় নিয়ে তথ্য নিয়েছেন। এরপর আমরা যারা ভাই-বোন আছি তাদের সম্পর্কে তথ্য নিয়েছেন। তিনি যা জানতে চেয়েছিলেন আমি তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাত ভাই দুই বোন। চট্টগ্রামে চার জন থাকতাম। এর মধ্যে দুই ভাই মারা গেছেন। ঢাকায় দুই ভাই থাকেন। আর ড.মুহাম্মদ ইউনূস বেশির ভাগ সময়ই দেশের বাইরে থাকেন।’

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় মদুনাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর মহিউদ্দিন বলেন, ‘মদুনাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই আজম সেখানে (ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাড়িতে) গিয়েছিলেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে তথ্য নেওয়ার জন্য গেছেন কিনা আমি জানি না। বিষয়টি জেলা পুলিশের মিডিয়ার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন।’

মদুনাঘাট এলাকার সার ব্যবসায়ী মঞ্জুর আলী বলেন, ‘গত ৩১ আগস্ট মদুনাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই আজম এসেছিলেন। তিনি নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে চেয়েছেন। ড. ইউনূসের পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে কে কোথায় আছেন, তারা কী করেন, তারা কোথায় লেখাপড়া করেছেনসহ আরও নানা কিছু জানতে চাওয়া হয়েছে। পরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ছোট ভাই মঈনুল এনামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি। তার ফোন নম্বর নিয়ে পুলিশ যোগাযোগ করেছে।’

এ প্রসঙ্গে মদুনাঘাট তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই আজম বলেন, ‘হাটহাজারী থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) স্যারের নির্দেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে জানার জন্য গিয়েছিলাম। প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানার জন্য হাটহাজারী থানার পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) আমির হোসেনের সঙ্গে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডে। শিকারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক বলেন, ‘আমরা একই গ্রামের বাসিন্দা। তার গ্রামের বাড়িতে কেউ থাকেন না। সবাই ঢাকা কিংবা দেশের বাইরে বসবাস করেন। তার সম্পর্কে জানার জন্য আমাকে কোনও পুলিশ ফোন করেনি। তবে চায়ের দোকানে কিংবা দোকানদারদের কাছ থেকে কোনও তথ্য পুলিশ সংগ্রহ করেছে কিনা তা আমার জানা নেই।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার কথা স্বীকার করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম শফিউল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিশেষ কিছু না। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাড়ি যেহেতু চট্টগ্রামে সেহেতু তার সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখা এই আরকি।’