প্রথম দিনে বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে পার হয়েছে ৫৬৭৮ গাড়ি

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দিয়ে প্রথম দিনে পার হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৭৮টি গাড়ি। এতে টোল আদায় হয়েছে ১২ লাখ ১৩ হাজার ৩০০ টাকা। কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের টোল ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

টোল ম্যানেজার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ৬টায় টানেল যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১২ লাখ ১৩ হাজার ৩০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। প্রথম দিনে হরতালের কারণে যানবাহন কম চলাচল করেছে। আশা করছি আজ প্রথম দিনের চেয়ে অনেক বেশি টোল আদায় হবে।’ 

টানেল প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী (অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ) কাজী মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন, ‘টানেলের ভেতর দিয়ে দৈনিক ১৭ হাজার যানবাহন চলাচলের টার্গেট রয়েছে। প্রথম দিনে গাড়ি পার হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৭৮টি। হরতালের কারণে কম গাড়ি পার হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে টোল আদায় সম্পন্ন হচ্ছে। টোল আদায়ের জন্য ১২টি বুথ আছে। প্রথম দিন ১০টি চালু করা হয়েছে। এখানে তিনভাবে টোল দেওয়ার সুযোগ আছে। তবে বর্তমানে ম্যানুয়ালি টোল আদায় করা হচ্ছে।’

টানেল কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, রবিবার সকাল ৬টায় টানেল দিয়ে যান চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ওইদিন সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ১৮৮টি গাড়ি পার হয়েছে। এ সময় ৩৫ হাজার ৮০০ টাকা টোল আদায় হয়। প্রথম ঘণ্টায় সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ৭২টি গাড়ি পার হয়। এ সময় টোল আদায় হয় ১৯ হাজার ২৫০ টাকা। দ্বিতীয় ঘণ্টায় সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ৪৯টি গাড়ি অতিক্রম করে। এতে ১১ হাজার ২০০ টাকা টোল আদায় হয়। রাত ১০টা পর্যন্ত ১৬ ঘণ্টায় গাড়ি পার হয় তিন হাজার ৮৬৭টি, টোল আদায় হয় ৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা প্রান্তে ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে বহুল প্রতীক্ষিত টানেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নিজ হাতে টোল দিয়ে টানেল পার হয়ে আনোয়ারা প্রান্তে আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন তিনি। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নিজের গাড়ির জন্য ২০০ টাকা এবং বহরে থাকা ২০টি গাড়ির জন্য চার হাজার টাকা টোল প্রদান করেন।

টানেল পাড়ি দিতে প্রাইভেটকার ও পিকআপ ২০০ টাকা, মাইক্রোবাস ২৫০ টাকা, বাস (৩১ সিটের কম) ৩০০ টাকা, বাস (৩২ সিটের বেশি) ৪০০ টাকা, বাস (৩ এক্সেল) ৫০০ টাকা, ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) ৪০০ টাকা, ট্রাক (৫ দশমিক ০১ থেকে ৮ টন) ৫০০ টাকা, ট্রাক (৮ দশমিক ০১ থেকে ১১ টন) ৬০০ টাকা, ট্রাক ও ট্রেইলার (৩ এক্সেল) ৮০০ টাকা, ট্রাক ও ট্রেইলার (৪ এক্সেল) ১০০০ টাকা টোল দিতে হচ্ছে।

শুরুতে টানেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। পরে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ দশমিক ৪২ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার ৯১৩ দশমিক ১৯ কোটি টাকা দিচ্ছে। বাকি টাকা দেয় বাংলাদেশ সরকার।