মামলা করতে গেলে পুলিশ লিখেছে জিডি

অপহরণের চারদিন পর পরিবার পেলো আনোয়ারের লাশ

আনোয়ার হোসেনমুদি দোকানি আনোয়ার হোসেনকে (৬২) অপহরণের অভিযোগে মামলা করতে গিয়েছিল তার পরিবার। কিন্তু মামলা না নিয়ে পুলিশ লিপিবদ্ধ করে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি)। কিন্তু মাঠে তাদের তৎপরতা ছিল না। তাই আবারও মামলা করতে গেলে পুলিশ তাদের কাছ থেকে ধমক দিয়ে হাতিয়ে নেয় পাঁচ হাজার টাকা। সে মামলা এখনও হয়নি, কিন্তু ঘটনার চারদিন পর পরিবার পেয়েছে আনোয়ারের অর্ধগলিত লাশ।
রাজশাহীর বাগমারার একটি পরিত্যক্ত ইটভাটা থেকে মঙ্গলবার দুপুরে ওই মুদি দোকানির লাশ উদ্ধার হয়। নিহত আনোয়ার হোসেন উপজেলার দ্বীপপুর ইউনিয়নের দ্বীপপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
শুক্রবার তাকে অপহরণ করা হয়।
আনোয়ারের পরিবারের অভিযোগ, অপহরণের পর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ সাধারণ ডায়েরি নিয়ে তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে। পুলিশ ব্যবসায়ীকে উদ্ধারে কোনও তৎপরতা দেখায়নি। তবে পুলিশের দাবি, তারা উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়েছে।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার শিকদারী এলাকার পরিত্যক্ত ইটভাটার আশপাশে দুর্গন্ধ ছড়ালে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয়। পরে কয়েকজন ব্যক্তি ইটভাটার হাউজে গিয়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করে। ইটভাটার হাউসের পাশে একটি চশমা পড়ে থাকায় পুলিশের সন্দেহ হয়।

পরে চারদিন আগে অপহরণ হওয়া দ্বীপপুর গ্রামের মুদি দোকানদার আনোয়ার হোসেনের পরিবারকে খবর দেয় পুলিশ। আনোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশটি তার পিতার বলে শনাক্ত করেন।

নিহতের ছেলে সাইফুল ইসলাম জানান, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তার পিতাকে অপহরণ করা হয়। নওগাঁর রাণীনগর এলাকার রওশন জামান ওরফে মোস্তফা জামান নামে এক ব্যক্তি কম দামে সিগারেট কিনে দেওয়ার কথা বলে তাকে অপহরণ করে। ওই সময় আনোয়ার হোসেনের কাছে প্রায় দেড় লাখ টাকা ছিল। ওই টাকার জন্যই তার পিতাকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে তার ধারণা।      

তিনি আরও জানান, অপহরণের পর বাবার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় পরিবারের লোকজন ওইদিন থানায় মামলা করতে যান। পুলিশ মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি নিয়ে তাদের ফেরত পাঠায়। সবশেষ গত সোমবার রাতে থানায় আবারও মামলা করতে গেলে পুলিশ পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে। পুলিশ পাঁচ হাজার টাকা নিয়েও মামলা তালিকাভুক্ত না করে তাদের বকাবকি করে এবং থানা থেকে ফেরত পাঠায়।

তবে বাগমারা থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ টাকা নেওয়া ও অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, পুলিশ মুদি দোকানিকে জীবিত উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল।

এই ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।

 

/জেবি/টিএন/