কুড়িগ্রামে সংকটাপন্ন তক্ষক উদ্ধার, গ্রেফতার ৫

কুড়িগ্রাম নাগেশ্বরী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়ন থেকে তিনটি সংকটাপন্ন প্রজাতির প্রাণী তক্ষক উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) ভোরে কচাকাটা থানাধীন বলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বলদিয়া পালপাড়া গ্রামের মো. মনির উদ্দিনের বাড়ি থেকে তক্ষক উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তক্ষক বেচাকেনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশ্বদেব রায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, বুধবার ভোরে কচাকাটা থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে বলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বলদিয়া পালপাড়া গ্রামের মনির উদ্দিনের বসতঘর থেকে তিনটি তক্ষক উদ্ধার করে। তক্ষক ক্রয়-বিক্রয় চেষ্টার অভিযোগে ওই বাড়ি থেকে নয়ানা গ্রামের মোরশেদ রহমান (৩২), বিষ্ণপুর গ্রামের কাশেম (৩৬), মোজাম্মেল (৪৮), রিয়াজুল ইসলাম (৪৫) এবং বড় ছড়ারপার গ্রামের শাহ আলমকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আরও কয়েকজন পালিয়ে যায়।

উদ্ধার তক্ষকআসামিদের বরাতে পুলিশ আরও জানায়, উদ্ধার করা তক্ষকগুলো ভারত থেকে সীমান্তপথে বাংলাদেশে আনা হয়েছে। মানুষকে বিভিন্নভাবে প্রতারিত করার উদ্দেশ্যে এগুলো ক্রয়-বিক্রয়ের প্রস্তুতি চলছিল।

ওসি বিশ্বদেব রায় বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

বাংলাদেশ বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, বাংলাদেশের লাল তালিকা ২০১৫ অনুযায়ী তক্ষক শিকার কম উদ্বেগের। কিন্তু বৈশ্বিক লাল তালিকা অনুযায়ী প্রায় সংকটাপন্ন।

তিনি বলেন, ‘তক্ষকের দাম ও তক্ষক দিয়ে তৈরি ওষুধ নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হয়েছে। আর গুজবে বিশ্বাস করে এক শ্রেণির লোক রাতারাতি ধনী হওয়ার স্বপ্নে তক্ষক শিকারে উৎসাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া তক্ষক  দ্বারা তৈরি বিভিন্ন ওষুধের উপকারিতা নিয়ে যা শোনা যায়, বৈজ্ঞানিকভাবে তার কোনও ভিত্তি নেই। এই গুজবটির কারণেই মূলত ধরে আনা তক্ষক উদ্ধার করা হচ্ছে এবং প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হচ্ছে।’