জয়পুরহাটে দুই মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে হত্যা এবং মাদকের পৃথক দুটি মামলায় পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া হত্যা মামলায় চার আসামিকে ১০ হাজার এবং মাদক মামলায় এক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-২-এর বিচারক আব্বাস উদ্দীন এ আদেশ দেন।

হত্যা মামলার আসামিরা হলো– পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর গ্রামের জাহনুর আলীর ছেলে সোহাগ (৩৬),  মৃত তৈমুদ্দিনের ছেলে রায়হান (৩৮),  নিজাম উদ্দিনের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৩৩), লোকমান হোসেনের ছেলে হারুনুর রশীদ (৩৩)। তাদের মধ্যে লোকমান পলাতক রয়েছে।

মাদক মামলার আসামি পাঁচবিবি উপজেলার গোপালপুর গ্রামের সোলাইমান সরদারের ছেলে সুজন সরদার (৩১)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, জয়পুরহাট শহরের ২নং রেলস্টেশন রোডে শীতল কম্পিউটার নামে প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী শাহাদুল ইসলাম। তিনি পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর গ্রামের সোহাগ, রায়হান, আমিনুল ইসলাম ও হারুনুর রশীদের কাছে ব্যবসায়িক লেনদেনের ৬০ হাজার টাকা পেতেন।  পাওনা টাকা আদায়ের জন্য বিভিন্ন সময়ে শাহাদুল তাদের বাড়িতে যেতেন। একইভাবে ২০১০ সালের ৬ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জয়পুরহাট শহর থেকে রতনপুর গ্রামে মেহেদী নামে এক ব্যক্তির বাড়ি যান। সেখান থেকে আলোচনা শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে জয়পুরহাটের উদ্দেশে মোটরসাইকেলে করে রওনা হন। রাত ৯টার দিকে পথে বামন গ্রাম এলাকায় ৭-৮ জন অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত শাহাদুলকে পিটিয়ে আহত করে। তার কাছে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনার পরই আমিনুল ইসলাম ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য শাহাদুল সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বলে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। ভর্তি করে শাহাদুলের বাড়িতে খবর দিয়ে সে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে বিকাল সাড়ে ৪টায় তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এ ঘটনায় নিহতের মা শহেরা বেগম বাদী হয়ে ২০১০ সালের ৯ জানুয়ারি পাঁচবিবি থানায় চার জনের নাম উল্লেখ এবং ৭-৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মমিনুল হক ২০১০ সালের ৩০ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আজ বিচারক এ রায় দেন।

অন্যদিকে, ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর পাঁচবিবি উপজেলার উত্তর গোপালপুর গ্রাম থেকে ১১৯ বোতল ফেনসিডিলসহ দুজনকে গ্রেফতার করেন জয়পুরহাট ‌ র‌্যাব-৫ সিপিসি-৩ সদস্যরা।

ওই ঘটনায় জয়পুরহাট ‌‌‌র‌্যাব সিপিসি- ক্যাম্পের এসআই মানিক চন্দ্র দেবনাথ বাদী হয়ে ওই রাতেই পাঁচবিবি থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই তোফায়েল হাসান ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালতের বিচারক একজনকে খালাস দিয়ে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের এই রায় দেন।

মামলার সরকারিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল, উদয় সিংহ এপিপি। আর আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন শাহানুর রহমান শাহীন ও রায়হান নবী।