মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন তদন্ত কর্মকর্তা

হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ১৯ মার্চ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।’

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মামুনুল হক মামলার বাদীকে ধর্ষণ করেছেন বলে তিনি আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, ‘এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে জেরা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনও প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি। রাজনৈতিক কারণে এই মামলা দিয়ে মামুনুল হককে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ তদন্ত ও সাক্ষ্যের মধ্যে বহু গরমিল রয়েছে। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।’

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তায় মামুনুল হককে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। পরে আদালতের শুনানি শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টের একটি রুমে কথিত স্ত্রীসহ হেফাজত নেতা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাদের ছিনিয়ে নেন। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ গ্রেফতার করে। এ ঘটনার ২৭ দিন পর ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে কথিত স্ত্রী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় অভিযোগ গঠন করেন নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল।