চবিতে ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে টানা আট দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, ওই শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হাতে ব্যানারে লেখা ছিল- ‘ধর্ষণচেষ্টাকারী শিক্ষক মাহবুবুল মতিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই,’ ‘যৌন নিপীড়কের স্থায়ী বহিষ্কার চাই,’ ‘অস্থায়ী শাস্তি আর নয়, স্থায়ী সমাধান চাই,’ ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হেনস্তাকারী কেন, প্রশাসন জবাব চাই,’ ‘আমার বোন লাঞ্ছিত কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার করার আগ পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরে যাবেন না।

রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শিতু বলেন, ‘আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চাই এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার করার আগ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। প্রয়োজনে দাবি আদায়ে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়াসহ যা যা করা দরকার, আমরা তাই করবো।’

একই বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কাছে সময় চাচ্ছে। আসলে আমরা তো ছাত্র; আমরা দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি, এতে আমাদের ক্লাস-ল্যাব হচ্ছে না। আমরা চাই, অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হোক। কিন্তু প্রশাসন তা না করে প্রক্রিয়াটাকে ধীরগতি করছে। আমরা আমাদের কর্মসূচি চলমান রাখবো। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো। যদি আগামী সোম-মঙ্গলবারের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত না আসে তাহলে আমরা আরও কঠোর অবস্থানে  যাবো।’

এদিকে, বিক্ষোভ করা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, ‘আমি তো তোমাদের ন্যায়বিচার দেওয়ার জন্য কাজ করছি। তদন্ত কমিটি শুক্র-শনিবার বাদ দিচ্ছে না। কমিটির আগামীকাল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। তারা এখনও সেটি টাইপ করছে। আমরা তো প্রথমেই ওই শিক্ষককে একাডেমিক কর্মকাণ্ড থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়েছি। আন্দোলন করে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়কে আর কত হেয় করবে? আমরা এমনিতেই লজ্জিত। এখন তোমরা ক্লাসে ফিরে যাও। তোমরা খুব দ্রুতই এর সমাধান পাবে।’

এর আগে রসায়ন বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গত বুধবার উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। অভিযোগে বলা হয়, ‘থিসিস চলাকালে সুপারভাইজার (অধ্যাপক) কর্তৃক যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হন তিনি। ল্যাবে একা কাজ করার সময় এবং কেমিক্যাল দেওয়ার বাহানায় নিজ কক্ষে ডেকে দরজা আটকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন ওই শিক্ষক।’