এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য টাকা আদায়ের অভিযোগ

এসএসসি পরীক্ষার চারটি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া দুই হাজার ৭শ’ পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০ টাকা করে বাধ্যতামূলক আদায় করার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বৈরাতি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী জানান, ব্যবহারিক পরীক্ষায় চারটি বিষয়ে ২০০ করে টাকা প্রত্যেক পরীক্ষার্থী না দিলে নম্বর কম দেওয়া হবে এবং এতে পরীক্ষায় ভালো ফল থেকে তারা বঞ্চিত হবে বলে হুঁশিয়ারি প্রদান করেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব আব্দুস সালাম মণ্ডল ও চার সহকারী শিক্ষক। ফলে বাধ্য হয়ে ২ হাজার ৭০০ পরীক্ষার্থীর সবাই ২০০ টাকা করে দিতে বাধ্য হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ জুন) পদার্থবিজ্ঞানের ব্যবহারিক পরীক্ষা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। তাদের কাছে চারটি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ ওই টাকা জোর করে নেওয়া হয়েছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈরাতী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পাঁচটি বিষয়ে ২ হাজার ৭৫১ জন শিক্ষার্থী ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক রিফুজার রহমান রিপন (ইনডেক্স নং ১০৩৯৬১২) ৬২৫ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে জনপ্রতি ৫০ টাকা করে ৩১ হাজার ২৫০ টাকা নিয়েছেন। একইভাবে রসায়ন বিভাগের শিক্ষক প্রকাশ চন্দ্র সরকার (ইনডেক্স নং ১১১৪৩৭৫) ৬২০ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০ টাকা করে ৩১ হাজার টাকা নিয়েছেন। অন্যদিকে, জীববিজ্ঞান শিক্ষক রণজিৎ কুমার (ইনডেক্স নং ১০২৮২৯৬) ৬২০ জন শিক্ষার্থীর থেকে ৩১ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। কৃষি বিষয়ের শিক্ষিকা আফরোজা খাতুন (ইনডেক্স নং ৫৬৬২৪৫) ৭২২ জন শিক্ষার্থীর থেকে ৩৬ হাজার ১০০ টাকা এবং উচ্চতর গণিত ব্যবহারিক খাতায় নম্বর দিতে শিক্ষক রিফুজার রহমান রিপন ১৬৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৮ হাজার ২৫০ টাকা নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈরাতি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে আদায় করা হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর অর্ধেক প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব, বাকি টাকা চার শিক্ষক ভাগবাটোয়ারা করে নেবেন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে বৈরাতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব আব্দুস সালাম মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে এই নিয়ম চলে আসছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ব্যাপারগুলো এবার বাইরে এসেছে।’

এদিকে, যে চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোর করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তারা কেউই এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ বর্মণ বলেন, ‘অভিযোগটি দুপুরে শুনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’