মোংলা ইপিজেডে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ

বাগেরহাটের মোংলা ইপিজেডে একটি কারখানার প্রায় দেড় হাজার শ্রমিককে ঈদের আগে হঠাৎ ছাঁটাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং কয়েকজন শ্রমিককে আটক করেছে।

জানা গেছে, শ্রমিকরা পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ এবং শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের পাওনা পরিশোধের দাবিতে কারখানা এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন এবং বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় এ সংঘর্ষ বাঁধে।

কারখানা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক ও পুলিশ সূত্র জানায়, মোংলা ইপিজেডের অভ্যন্তরে লাগেজ (ব্যাগ) উৎপাদনকারী ভারতীয় কোম্পানির মালিকানাধীন ‘ভিআইপি’ নামে প্রতিষ্ঠানে গত কয়েক মাস ধরে লোকসান চলছিল। এতে কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ এক বছর চাকরিরত এক হাজার ৭৭৭ জন শ্রমিককে শ্রম আইন অনুযায়ী ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নেয়। সোমবার সকাল ৯টার দিকে ছাঁটাই করা শ্রমিকদের চলতি মার্চ মাসের বেতন ও ঈদুল ফিতরের বোনাসের টাকা দেওয়া শুরু হয়। সে সময় শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা বাড়তি আরও তিন মাসের বেতন এবং ঈদুল আজহার বোনাসের টাকা প্রদানের দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। শত শত নারী ও পুরুষ শ্রমিক ইপিজেডের প্রধান গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে মারমুখি হয়ে ইপিজেডের গেটের ভেতরে কারখানা এলাকায় ঢিল ও ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। তারা কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। এ সময় ইপিজেডের নিরাপত্তা কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের কয়েক দফা সংঘর্ষ বাঁধে।

পুলিশ বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে বিকাল ৩টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কয়েকজন শ্রমিক ও ইপিজেডের নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন।

মোংলা থানার ওসি কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেপরোয়া হয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেশ কয়েকজন শ্রমিককে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।’

এদিকে ভিআইপি ফ্যাক্টরির মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘শ্রম আইন মেনে অগ্রিম বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হয়েছে। তার পরও কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক বিনা উসকানিতে ফ্যাক্টরিতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।’ এ ব্যাপারে তারা আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানান।