বন্ধুকে ডেকে খুন! গ্রেফতার ৪

নাটোর নলডাঙ্গা উপজেলার পিঁপরুল এলাকায় এক পরিত্যক্ত ভবনে বন্ধুকে ডেকে বখাটেদের সঙ্গে নিয়ে স্কুল পড়ুয়া অপর দুই বন্ধু হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে চার আসামিকে গ্রেফতারের পাশাপাশি তাদের দেওয়া তথ্য মতে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, মুক্তিপণ আদায়ের লক্ষ্যেই ওই স্কুলছাত্রকে ডেকে নিয়ে এক পর্যায়ে খুন করা হয়।

তবে পরিবারের দাবি, তাদের কাছে কোনও মুক্তিপণ চেয়ে ফোন দেওয়া হয়নি।

নিহত ফারহান জাহি হিমেল (১৫) পিপরুল এলাকার ওমর ফারুকের ছেলে এবং পাটুল হাফাঁনিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র। গ্রেফতার আসামিরা হলো-নিহতের সহপাঠী একই এলাকার প্রদীপ সাহার ছেলে সজল সাহা পার্থ (১৮), অপর সহপাঠী পাটুল পূর্বপাড়ার সুমন আলীর ছেলে মেহেদী হাসান (১৭), কলেজ পড়ুয়া হাঁপানিয়া এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে শরিফুল ইসলাম সুজন (১৮) ও সুজনের সহপাঠী সড়কুতিয়া (তালতলা বাজার) এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে শিমুল ইসলাম (১৮)।

নলডাঙ্গা থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামান শুক্রবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতের বাবা ওমর ফারুক ওই ঘটনায় শুক্রবার মামলা করেন। এর আগে তিনি লিখিত অভিযোগে দাবি করেন, তার ছেলে ফারহান জাহি হিমেল গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে প্রতিদিনের মতো ঘোরাফেরা করতে বাড়ি থেকে বের হয়। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরও বাড়িতে না ফেরায় তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তিনি সন্দেহ করেন যে, হিমেলকে হয়তো কেউ হত্যা করে মরদেহ গোপন করে রেখেছে।

এরপর নলডাঙ্গা থানার একাধিক চৌকস টিম মাঠে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত তদন্তেপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলাম সুজনকে রাতেই গ্রেফতার করা হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ও তার হেফাজত হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেখানো মতে গত মধ্যরাতে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পেছনে পরিত্যক্ত ভবন হতে ভিকটিম ফারহান জাহি হিমেলের রক্তমাখা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় ঘটনাস্থল ও তার পাশ হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি লোহার দা, রক্তমাখা গামছা, রশি ও পলিথিন, ভিকটিমের ব্যবহৃত একটি স্যামসাং বাটন মোবাইল ফোন ও একটি সাইকেল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সজল সাহা পার্থ,  শিমুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ঘটনায় জড়িত শিশু মেহেদী হাসানকেও গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার দুপুরে আসামিদের কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আসামিরা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে, মূলত মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের বাবার দাবি, মুক্তিপণ চেয়ে তাদের কাছে কোনও খবর বা ফোন দেওয়া হয়নি।

নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এ টি এম মাইনুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখেই ঘটনার তদন্ত চলছে। দ্রুতই এই হত্যা রহস্য উন্মোচন হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।