ইবিতে স্বৈরাচারের নামের হলগুলো শহীদদের নামে রাখা উচিত: প্রেস সচিব

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘সবার উচিত চব্বিশের শহীদদের মূল্যায়ন করা। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) যে হলগুলোর নাম এখনও স্বৈরাচারের নামে রয়ে গেছে, আমি মনে করি অতিদ্রুত সেগুলো পরিবর্তন করে এ অঞ্চলের শহীদদের নামে রাখা উচিত। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের বীরদের স্মরণ করতে পারবো। কুষ্টিয়াতে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের নামে শহীদ মিনারও নির্মাণ করা উচিত।’

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির যৌথ উদ্যোগে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ‘জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন৷

এ সময় শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে কাজ করছে। আগের চেয়ে দেশের পরিস্থিতি বর্তমানে অনেকটা স্থিতিশীল পর্যায়ে আছে। অর্থনৈতিক রিকভারি হয়েছে। এ ছাড়া জাস্টিস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি নিশ্চিতে গুম, খুন, গণহত্যার বিচারের কাজ করা হচ্ছে।’ 

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ও প্রধান আলোচক হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাংগীর আলম এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ইবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. হোসাইন আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রশিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ আলোচক হিসেবে ছিলেন ইবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সহসভাপতি, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) বিশেষ সংবাদদাতা ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ে কর্মরত এস এম রাশিদুল ইসলাম।

এ ছাড়া সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাজমুল হক জায়িমের সঞ্চালনায় সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাবেক সহ-সভাপতি ও ইবির ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইআইইআর) পরিচালক অধ্যাপক ইকবাল হোছাইন, সাবেক সভাপতি ও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার সুজা উদ্দিন, সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র সহ-সম্পাদক এমদাদুল হক, বণিক বার্তার সিনিয়র রিপোর্টার ও সংগঠনটির সাবেক সভাপতি ইমামুল হাছান আদনান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান নবীন ও সাবেক সভাপতি ইমরান শুভ্র।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘চব্বিশের বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিস্টের পতন হয়েছে। স্বৈরাচারের দীর্ঘ সময়ের সীমাহীন গুম, খুন, টাকা পাচার, অন্যায়, দুর্নীতি স্বল্প সময়ে পরিবর্তন করা সম্ভব না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ড. ইউনূস যোগ্য রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি দেশের আমূল পরিবর্তনের জন্য কাজ করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যম আন্দোলনকে সফল করার জন্য অনেক অবদান রেখেছে। সাংবাদিকরা জাতির বিবেক হিসেবে কাজ করে। সবখানে কিছু সুবিধাবাদী থাকে, তবে চব্বিশের আন্দোলনেও ত্যাগী সাংবাদিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে গেছেন। দেশের স্বার্থে সৎ সাংবাদিকতা জারি রাখতে হবে। বাংলাদেশকে আগামী দিনে শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে সাংবাদিকরা অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন বলে বিশ্বাস করি।’ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিকে এই আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।