ব্রহ্মপুত্রে পানি বৃদ্ধি, পাঁচ মাস পর চিলমারী-রৌমারী নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু

উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। নাব্য সংকট দূর হওয়ায় দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর চিলমারী-রৌমারী নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বেলা ১২টা থেকে এই নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) চিলমারীর ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে নাব্য সংকটের কারণে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বরে এই নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়।

প্রফুল্ল চৌহান বলেন, ‘নাব্য সংকটের কারণে কয়েক মাস ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেরি কুঞ্জলতা যাত্রী ও তিনটি পরিবহন নিয়ে রৌমারীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়। আপাতত এই নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’

এর আগে গত বুধবার বিকালে পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি কুঞ্জলতা রৌমারী ঘাট থেকে ছেড়ে চিলমারী নৌ বন্দরে  পৌঁছায়।

এদিকে, ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ফেরি বন্ধ থাকায় শুধু যাত্রীরা নন, ভোগান্তিতে পড়েছিলেন পণ্য পরিবহনকারী ব্যবসায়ীরাও। দীর্ঘ কয়েক মাস পর ফেরি চলাচল শুরু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন তারা।

ব্যবসায়ী শহিদুর রহমান বলেন, ‘ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় আমরা পণ্যবাহী যান পারাপার করতে পারছিলাম না। এখন আবার সেই সুযোগ হওয়ায় আমরা স্বস্তি পেলাম। কিন্তু কতদিন চালু থাকে সেটা নিয়ে সন্দিহান। নিয়মিত যাতে ফেরি চলাচল করতে পারে সে ব্যবস্থা করা উচিত।’

রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা নাহিদ হাসান বলেন, ‘এটি স্বস্তির খবর। আমাদের এলাকার যাত্রী এবং ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। বিশেষ করে, সামনে কোরবানি ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে। নাব্য সংকটে যাতে ফেরি চলাচল আবার বন্ধ না হয় সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে অনুরোধ, এই নৌপথটি খননের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান করুন। এতে এই এলাকার মানুষের ভোগান্তি দূর হবে।’

গত ডিসেম্বরে ফেরি চলাচল বন্ধ হলে ব্রহ্মপুত্র নদের নাব্য সংকট কাটাতে ড্রেজিং করেও তেমন সুফল মিলছিল না। তাই খননকাজ বন্ধ রেখছিল বিআইডব্লিউটিএ। ফেরি চলাচলও বন্ধ রাখা হয়।

বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ প্রতিনিয়ত বদলায়। ড্রেজিং করার পরদিনই ফের উজানের পানির সঙ্গে আসা পলিতে পুরে উঠে। আমরা একাধিকবার ড্রেজিং করেও ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করতে পারিনি। তাই ড্রেজিং বন্ধ রাখা হয়েছিল। এখন নদে পানি বাড়ায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।’