যশোর পৌর কৃষক দলের সভাপতিকে গুলি করে হত্যা

যশোরের অভয়নগরে পৌর কৃষক দলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম সরদারকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের ডহর মশিয়াহাটি গ্রামে একটি মাছের ঘেরের পাশে এই ঘটনা ঘটে।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড সে বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেননি তিনি। 

নিহত তরিকুল ইসলাম সরদার অভয়নগর পৌরসভাধীন ধোপাদি এলাকার বাসিন্দা।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, বিকেলে কৃষক দল নেতা তরিকুল ঘের সংক্রান্ত বিষয়ে সুন্দলী ইউনিয়নের ডহর মশিয়াহাটি এলাকায় যান। সেখানে প্রতিপক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হলে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনার পর উত্তেজিত লোকজন ডহর মশিয়াহাটি এলাকার জনৈক পিন্টুর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।

স্থানীয় সংবাদকর্মীরা জানান, তরিকুল ইসলাম সরদার অভয়নগর উপজেলার ডহর মশিয়াহাটি এলাকায় অংশীদারদের সঙ্গে মাছের ঘেরের ব্যবসা করতেন। সম্প্রতি তিনি অংশীদারদের কাছ থেকে গোটা ব্যবসা নিজ নামে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ডিড করে দেওয়ার কথা বলে পিন্টু বিশ্বাস নামে একজন অংশীদার আজ তরিকুলকে ঘেরের কাছে ডেকে নেন। সেই অনুযায়ী তরিকুল ইসলাম মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। তখন তরিকুলের সঙ্গে সুমন নাম একজন সহকারী ছিলেন।

সুমন জানিয়েছেন, কথাবার্তার একপর্যায়ে অংশীদাররা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে তরিকুলকে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে পিন্টু বিশ্বাসের ঘরে নিয়ে তরিকুলকে গুলি করলে তিনি জীবন বাঁচাতে পালিয়ে যান। ওই ঘরে মোট ছয়জন ছিলেন। প্রত্যেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।

স্থানীয় সংবাদকর্মীরা জানান, তরিকুলের মাথায় তিন রাউন্ড গুলি করা হয়েছে, শরীরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ইঁট দিয়ে তার মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে।ঘটনাস্থলের বাড়িটি পিন্টু বিশ্বাসের বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন। আশপাশে মাত্র চারটি বাড়ি আছে। রাত ৮টার দিকে বাড়িগুলো ফাঁকা ছিল। যে ঘরে তরিকুলকে খুন করা হয়েছে, সেখানে দুটি পাসপোর্ট পেয়েছেন স্থানীয়রা। একটি অমর বিশ্বাসের ছেলে বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের, অন্যটি ধীরেশ্বর বিশ্বাসের স্ত্রী দুর্গারানী বিশ্বাসের। স্থানীয়রা বলেছেন যে, দুর্গারানী হলেন পিন্টু বিশ্বাসের মা।

কৃষকদল নেতা খুনের খবর পেয়ে অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলিমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রাত আটটা দশ মিনিটের দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ মর্গের উদ্দেশে নিয়ে যায়।

ওসি আব্দুল আলিম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন, খুনিদের ধরতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। সন্দেহভাজন দুইজনকে পুলিশ আটক করেছে।

যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই আলম সিদ্দিকী জানান, ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা জোরদারে অভয়নগর থানা, দামুখালি ও গাজীপুর ক্যাম্প এবং যশোর পুলিশ লাইন থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীকেও খবর দেওয়া হয়েছে।