গাজীপুরে মোঘর খাল খনন ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শুরু

পরিবেশবাদীদের দাবি পূরণ ও নগরবাসীর জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ লাঘবে গাজীপুর মহানগরীর দীর্ঘতম ও প্রাচীন মোঘর খাল পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় খালটির সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, খনন ও পরিষ্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৩ মে) সকাল থেকে খালটির উৎসমুখ মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস এলাকা থেকে ওই কার্যক্রম শুরু করে কর্তৃপক্ষ।

সিটি করপোরেশন ও পরিবেশবাদীরা জানান, গাজীপুরে ভোগড়া থেকে শুরু হয়ে মোঘর খালটি পূর্ব চান্দনা, খাইলকুর, হায়দারাবাদ প্রভৃতি এলাকা অতিক্রম করে হায়দারাবাদ খালে মিলিত হয়। পরে নিমতলী খাল হয়ে টঙ্গী তুরাগ নদীতে পড়ে। মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার জলবদ্ধতা নিরসনে এই খালটির রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এটি সবচেয়ে বেশি অবৈধ দখল ও দূষণের শিকার। বিভিন্ন শিল্প কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, অবৈধ দখলে খালটি অস্তিত্ব হারাচ্ছিল।

স্থানীয় এবং ঢাকার বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, খালপাড়ের মানুষ এ খালটির সীমানা নির্ধারণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও খননের দাবি জানিয়ে আসছিল। পরে গাজীপুর সিটি করপোরেশন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় খালটির সীমানা নির্ধারণ করে অবৈধ দখল উচ্ছেদ, খনন ও ময়লা অপসারনের কাজ শুরু করেছে। খালের অপসারিত মাটি ও অন্যান্য বর্জ্য খালের পাশে না ফেলে ট্রাক দিয়ে সরাসরি ডাম্পিং পয়েন্টে নিয়ে ফেলা হচ্ছে।

বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন বলেন, ‘মোঘর খালটি গাজীপুর মহানগরীর পানি নিষ্কাশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিল। কিন্তু বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক বর্জ্য, অবৈধ দখল ইত্যাদি কারণে এই খালটি মৃতপ্রায় অবস্থায় চলে যায়। এসব কারণে বেলা, রিভার ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন এটির সীমানা নির্ধারণ করে খনন এবং পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল। বর্তমানে গাজীপুর সিটি করপোরেশন এই খালটি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণ করায় আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই কার্যক্রমকে টেকসই করার জন্য খালটির স্থায়ীভাবে সীমানা নির্ধারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতে খালটি যাতে আবার অবৈধ দখল না হয় এবং কেমিক্যাল বর্জ্য খালে যেতে আর না পারে, তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।’

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার সরফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘নাগরিক সুবিধার জন্য জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিবেশ রক্ষায় আমরা এই খালটির সীমানা নির্ধারণ করে অবৈধ দখল উচ্ছেদ, খনন ও পরিষ্কারে কাজ শুরু করেছি। আশা করা যায়, কাজটি সম্পন্ন হলে এই খালের আশপাশের মানুষের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা ও নানা রকম দূষণের কারণে সৃষ্ট দুর্ভোগ লাগব হবে।’ এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন– গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা সোহেল রানা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী রাসেলসহ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা।