কুমিল্লায় জাতীয় পর্যায়ে কবি নজরুলের জন্মবার্ষিকীর তিন দিনের অনুষ্ঠান শুরু

এ বছর জাতীয় পর্যায়ে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকীর তিন দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে কুমিল্লা নগরী ও জেলার মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে। রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সবাই অনুষ্ঠানস্থলে অতিথিরা উপস্থিত হন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সভাপতিত্ব করছেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবাই উপস্থিত থাকলেও উপস্থিত হতে বিলম্ব হয় লেখক ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খানের। এ সময় সংস্কৃতি উপদেষ্টা উপস্থিত হলেও তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন। বেলা সাড়ে ৩টা থেকে অপেক্ষা শুরু হয়। এ সময় বারবার তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা বিরক্ত হবেন না। আমি সময় চেয়ে নিচ্ছি।’ প্রায় ১৫ মিনিট পর অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান আসলে অনুষ্ঠান উদ্বোধন হয়।

জানা গেছে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী রবিবার। জাতীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকীর তিন দিনের অনুষ্ঠানটি এ বছর কুমিল্লা নগরী ও কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় তিন দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। বিকাল ৩টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি হচ্ছে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে। দ্বিতীয় দিন জেলার মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে এবং শেষ দিন ২৭ মে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার।

উল্লেখ্য, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২১ থেকে ১৯২৩ সাল পর্যন্ত কুমিল্লা ও মুরাদনগরে এসেছেন পাঁচবার। এ সময় এখানে কবি লিখেছেন বহু গান ও কবিতা। কবির প্রেম, বিরহ, বিয়ে, সংগীত শিল্পী হিসেবে আর্বিভাব হওয়ার পাশাপাশি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন এবং কারাবরণের মতো ঘটনাবহুল সময় কেটেছে এই কুমিল্লায়। ১৯২১ সালে জেলার মুরাদনগরের দৌলতপুর গ্রামের বিশিষ্ট পুস্তক ব্যবসায়ী ক্যাপ্টেন আলী আকবর খানের সঙ্গে প্রথম কুমিল্লায় ও দৌলতপুরে আসেন তরুণ কবি নজরুল। আলী আকবর খানের বাড়িতে বেড়াতে এসে তার ভাগনি নার্গিসের প্রেমে পড়েন কবি। অতঃপর বিয়ে এবং বিচ্ছেদ হয় দুজনের। শেষে কবি ঘর বাঁধেন কুমিল্লা শহরের মেয়ে প্রমিলার সঙ্গে।

এদিকে, কবির জীবনের উল্লেখযোগ্য স্থান মুরাদনগরের দৌলতপুর ১০২ বছর পর এই প্রথমবারের মতো মুরাদনগর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল সম্পাদিত ‘দৌলতপুরে নজরুল’ শীর্ষক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য কুমিল্লা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ২৬ মে দৌলতপুরে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করা হবে।