দাবি পূরণ না হওয়ায় ফের আন্দোলনে পাটকল শ্রমিকরা

খুলনা-যশোর অঞ্চলে সকাল সন্ধ্যা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ অব্যাহত

প্রশাসন ৩দিনের সময় নিয়েও সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারায় সোমবার থেকে ফের সকাল সন্ধ্যা লাগাতার রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছে পাটকল শ্রমিকরা। রাষ্ট্রায়ত্ত জুট মিল সিবিএ-ননসিবিএ ঐক্য পরিষদের আহ্বানে খুলনা যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত সাত পাটকলের শ্রমিকর ভোর ৬টা থেকে অবরোধ শুরু করেন। তারা খুলনার নতুন রাস্তা মোড় ও আলিম জুট মিল গেটে এবং নওয়াপাড়ার জেজেআইর গেটে অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন। এর ফলে ভোর ৬টা থেকে খুলনা-যশোর মহাসড়কের ৩টি স্থান দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন এবং রেল চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। শ্রমিকদের এ লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচিতে এ অঞ্চলের পাটকলগুলো অচল হয়ে পড়েছে।

রেলওয়ের খুলনা স্টেশনের মাস্টার কাজী আমিরুল ইসলাম জানান, শ্রমিকরা নতুন রাস্তা মোড়, আটরা ও রাজঘাট এলাকায় রেলপথে অবস্থান নেওয়ায় খুলনার সঙ্গে দেশের রেল যোগাযোগ সকাল ৬টা থেকেই বন্ধ রয়েছে। অবরোধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন যাওয়া-আসা করতে পারছে না। ফলে যাত্রীরা স্টেশনেই অপেক্ষা করছেন।

গত ৭ এপ্রিল শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক ৩ দিনের সময় নিয়েছিলেন। রবিবার ছিল তিনদিনের শেষ দিন। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসক শ্রমিকদেরকে সন্তোষজনক কোনও পদক্ষেপের কথা জানাতে পারেননি। এর ফলে শ্রমিকরা দ্বিতীয় দফায় লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি শুরু করল। পাশাপাশি মিলগুলোতে শ্রমিকদের লাগাতার ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। সোমবার ধর্মঘটের সপ্তম দিন অতিবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, সোমবার ভোর থেকে শুরু হওয়ায় লাগাতার অবরোধের কারণে খুলনা-যশোর মহাসড়কে যানজট দেখা দিয়েছে। বন্ধ রয়েছে রেল ও। এ অবস্থার কারণে সড়ক ও রেলপথে চলাচলরত যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।

খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকরা ভোর থেকে নতুন রাস্তা মোড়ে অবস্থান নিয়ে রাজপথ-রেলপথ অবরোধ করেন। তারা সড়ক ও রেলপথের ওপর অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন। এছাড়াও সমাবেশ মঞ্চ থেকে প্রতিবাদী সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।

খুলনার খালিশপুরের প্লাটিনাম, ক্রিসেন্ট, দিঘলিয়ার স্টার, আটরা শিল্প এলাকার আলীম, ইস্টার্ণ, নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের প্রায় ৩৫ হাজার শ্রমিক দ্বিতীয় দফার ৩টি স্থানের এ অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।

শ্রমিকদের দাবিগুলো হচ্ছে : মিলগুলোকে পূর্ণাঙ্গ উৎপাদনমুখী করতে পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়, পে-কমিশনের ন্যায় অবিলম্বে শিল্প শ্রমিকদের জন্য মজুরি কমিশন বোর্ড গঠন, ২০১৩ সালের ১ জুলাই ঘোষিত ২০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান এবং খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিলকে জাতীয়করণ এবং কর্ণফুলী জুট মিলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরণসহ সব বকেয়া পরিশোধ।

ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মো. সোহরাব হোসেন বলেন, শ্রমিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। প্রশাসন আশ্বাস দিয়ে সময় নিয়েও সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এখন আর শ্রমিকরা আর কোন আশ্বাসে মজবে না। ৫ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।

/টিএন/