আজ ভোলা মুক্ত দিবস

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সংলগ্ন বদ্ধভূমিআজ ১০ ডিসেম্বর ভোলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে কার্গো লঞ্চে করে ভোলা থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। শত্রুমুক্ত ভোলায় হাজারো মুক্তিকামী মানুষ সেদিন রাস্তায় নেমে আনন্দ উল্লাস করেন।

সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভোলা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার (তথ্য ও প্রচার) মো. ছাদেক জানান, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী ওয়াপদা ও ডাকবাংলোয় অবস্থান নিয়ে নৃশংস অত্যাচার চালায়। বীর মুক্তিযোদ্ধারা বোরহানউদ্দিনের দেউলা, বাংলাবাজার, শান্তিরহাট, ঘুইংগারহাট চরফ্যাশন ও লালমোহনে দেবীর চরসহ বিভিন্ন এলাকায় সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীকে বাধা দেন।

মুক্তিযোদ্ধারা ভোলার অধিকাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যখন শহর নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রস্তুতি নেন, সেই সময় ১০ ডিসেম্বর ভোররাতে পাকিস্তানি হানাদাররা চারদিকে গুলি ছুড়তে থাকে। তখন মুক্তিযোদ্ধা কাজী জয়নাল ও ফিরোজের নেতৃত্বে ১৩ জনের একটি বাহিনী তাদের পেছন থেকে ধাওয়া করলে হানাদাররা ভোর ৫টায় ভোলার পুরান লাশ কাটা ঘরের পাশে রাখা মরহুম ইলিয়াস মাস্টারের লঞ্চে চড়ে ভোলা থেকে পালিয়ে যান। ওই সময় তাদের গতিরোধ করার জন্য খালে গাছ ফেলে ব্যারিকেড দিয়েছিল মুক্তিকামী জনতা। পাক হানাদারদের বহনকারী ওই কার্গো লঞ্চটি চাঁদপুরের মেঘনায় ডুবে ওই হানাদার বাহিনীর অধিকাংশ সদস্যের মৃত্যু ঘটে বলে জানা যায়। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। সেদিন পাকিস্তানি সেনাদের পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ভোলা হানাদারমুক্ত হয়।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে ভোলার লড়াকু সন্তানরা তখনকার ভোলা এসডিও অফিস বর্তমান জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের ছাদে উঠে পাকিস্থানের পতকা পুড়িয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলেন লাল সবুজের স্বাধীন বাংলার জাতীয় পতাকা।

/এফএস/