বরগুনায় অপহরণের ৬ দিনেও উদ্ধার হয়নি কলেজছাত্রী তানজিলা

বরগুনাবরগুনার আমতলী সরকারি কলেজের স্নাতকের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী তানজিলাকে অপহরণের ৬ দিনেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বুধবার (১৯ এপ্রিল) আমতলী উপজেলার ডাঙ্গাপারা এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় রাসেল ও তার সন্ত্রাসী দল।

তানজিলার পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের আন্তরিকতার অভাবে এখনও তানজিলাকে উদ্ধার করা হয়নি। তবে পুলিশ বলছে, তানজিলাকে উদ্ধারের সব ধরনের চেষ্টা চলছে।

তানজিলার ছোট বোন তামান্না বলেন, গত ১৯ এপ্রিল ( বুধবার ) বড় দুলাভাইয়ের সঙ্গে আমরা বেশ কয়েকজন স্থানীয় বুড়িশ্বর ( পায়রা ) নদীর তীরে ঘুরতে যাই। নদী দেখে বাড়ি ফেরার পথে ডাঙ্গাপাড়া নামকস্থানে রাসেল ও তার সন্ত্রাসী দল আমাদের পথরোধ করে। এ সময় তাদের ইজিবাইক গাড়ি থামালে রাসেল ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। তারা এসে আমার মেঝ বোন তানজিলাকে উঠিয়ে নিতে চাইলে এক পর্যায়ে আমার দুলাভাই বাধা দিলে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।

এ সময় দুলাভাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমার বোনকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় আমরা বাধা দিতে গেলে রাসেলের সহযোগীরা আমাদেরকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। একই সঙ্গে আমাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনগুলো নিয়ে যায়। পরে রাসেল আমার বোন তানজিলাকে মোটরসাইকেলে নিয়ে দ্রুত চলে যায়।

এদিকে এ ঘটনার দুদিন পরে তানজিলার বাবা নিজাম উদ্দিন বিশ্বাস বাদী হয়ে ২১ এপ্রিল আমতলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৩৮/১৫২।

তানজিলার মা শেফালি বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘বেশ কয়েক মাস আগে আমার মেয়ে তানজিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় রাসেল। আমরা সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি।সেই থেকে রাসেল সবসময় আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করে আসছিল। এরই জেরে রাসের আমার মেয়েকে তার লোকজন নিয়ে অপহরণ করে চলে গেছে।’

শেফালি বেগম আরও বলেন, ‘ আমার মেয়েকে অপহরণের সময় রাসেলের সঙ্গে ৯/১০ জন লোক ছিল।তাদের একজনকেও পুলিশ এখন গ্রেফতার করতে পারেনি।

এদিকে তানজিলাকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে আরপাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। এ সময় আয়োজিত সমাবেশে বক্তরা বলেন, ‘অপহরণের ৬ দিন পার হয়ে গেলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। একই সঙ্গে মামলার কোনও আসামিকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। দ্রুত তানজিলাকে উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে রাসেলের বাড়িতে গিয়ে প্রথমে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে পাশের বাড়ি থেকে রাসেলের বোন আসলে তার সঙ্গে রাসেলের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সে রাজি হয়নি।

সহকারী পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল ) মো. ওয়ারেস বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সোর্স ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে অপহরণকারীদের ধরতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যেই তানজিলাকে উদ্ধার এবং আসামিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।’

/এআর/