এক বছর ধরে ভাঙা পিরোজপুর মৎস্য বন্দরের সামনের সেতু

pirojpur pic-4পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা ইউনিয়নের বাদুরা গ্রামে মৎস্য বন্দর থেকে পাড়েরহাট বন্দর বাজারে যাওয়ার সেতুটি প্রায় এক বছর আগে ভেঙে গেছে। ফলে নৌকায় পার হতে হচ্ছে মৎস্য ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসীকে। মাছ নিয়ে নৌকা পার হতে গিয়ে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কঁচা নদী থেকে উত্তর দিকে বয়ে গেছে পিরোজপুর-পাড়েরহাট ভারানী খাল। এ খালের পূর্বপ্রান্তে শংকরপাশা ইউনিয়নের বাদুরা গ্রাম। এখানে রয়েছে মৎস্য বন্দর যা সবার কাছে পাড়েরহাট মৎস্য বন্দর নামে পরিচিত। আর পশ্চিম প্রান্তে ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের পাড়েরহাট বন্দর বাজার।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল বাসার মন্টু খান জানান, সমুদ্র থেকে প্রতিদিন ট্রলারে মাছ নিয়ে এ মৎস্য বন্দরে আসেন মৎস্যজীবীরা। এরপর সেগুলো ঠেলা গাড়ি বা ভ্যানে করে ওই সেতু দিয়ে পাড়েরহাট বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে গাড়িতে করে দেশের  বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয় ওই মাছ। কিন্তু সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এখন ছোট নৌকায় করে মাছ খালের অপর পাড়ে নেওয়া হচ্ছে।

pirojpur pic-3পাড়েরহাট বন্দরের ব্যবসায়ী মোকাররম হোসেন কবির জানান, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে শংকরপাশার বাদুরা গ্রামে মৎস্য বন্দর গড়ে ওঠে। এ মৎস্য বন্দরকে ঘিরে ধীরে ধীরে বন্দরের অপর পাড়ে (পাড়েরহাট বন্দরে) বড় মুদি-মনোহরী, কাপড়-চোপরের দোকান তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিদিন এ সেতুর ওপর দিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০ হাজার লোক চলাচল করতো। কিন্তু গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সেতুটি ভেঙে যায়। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সবাইকে।

স্কুলছাত্র রিপন জানায়, সেতু ভেঙে যাওয়ায় খেয়ায় করে তাদের খরস্রোতা এ খাল পার হতে হচ্ছে।

জানা গেছে, প্রায় ৩৫ বছর আগে লোহার খুঁটির ওপর সিমেন্ট খোয়ার ঢালাইয়ে সেতুটি নির্মাণ করেছিল পিরোজপুর জেলা পরিষদ।

পিরোজপুর এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সেতুটির দৈর্ঘ্য ২০০ ফুট এবং প্রস্থ ৮ ফুট। বিগত বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদে একবার ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে (ভেঙে যাওয়ার ৩ মাস আগে) সেতুটির বড় ধরনের মেরামত করা হয়। কিন্তু ১৫ সেপ্টেম্বর সেতুটি আবারও ভেঙে যায়।

pirojpur pic-1মৎস্য ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, সেতুটি আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মৎস্য পরিবহনে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। 

সদর উপজেলার শংকরপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন মল্লিক স্বপন বুধবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রায় এক বছর হলো সেতুটি ভেঙে গেছে। স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীসহ শ্রমজীবীদের দুর্ভোগ বেশি হচ্ছে।’

এরপর তিনি বলেন, ‘দুদিন আগে বাদুরা এলাকায় একটি জানাজায় গিয়েছিলাম। লোকজন আমাকে ঘিরে ধরে- সেতু কবে হবে জানতে চায়। আমি কারও প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি।’

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘সেতু নির্মাণ বা পূণঃনির্মাণের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।’

পিরোজপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল হাসান বলেন, ‘স্বল্প সময়ের মধ্যে মৎস্য বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পাড়েরহাট ভাড়ানী খালের ওপর নতুন করে একটি সেতু নির্মাণ করার চেষ্টা করছি। এটি নির্মিত হলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ আর থাকবে না।’

/বিএল/