বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ, আহত ২০

Barisal photo- Twenty injured after Barisal University students ransaked shops,vehicles over smoking cigarates before local elderly persons - Copy (5)বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কর্নকাঠি ও চরআইচা এলাকার ৪০টি দোকানসহ বেশ কয়েকটি বাড়ি ঘর এবং ১০/১৫টির গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। শুক্রবার রাত ৮টার বরিশালের কর্নকাঠিস্থ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার সফিউল্লাহ মো. নাসির এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত বলেন,‘তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও স্থানীয়দের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। যদি কোনও পক্ষ এ ব্যাপারে মামলা দিতে চায় তাহলে মামলা গ্রহণ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা রয়েছে।’

এ ঘটনায় আহত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. আল আমিন বলেন, ’বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কর্নকাঠি এলাকার বখাটেরা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এছাড়া তারা ক্যাম্পাসে মাদক বিক্রি ও সেবন করতো। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের সঙ্গে বিরোধ ছিল ছাত্রদের। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে আমরা ১০/১২ জন বন্ধু ভার্সিটির সামনে একটি দোকনে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় স্থানীয় বখাটে জয়, বাপ্পি ও আশিক আমাদের দোকান থেকে চলে যেতে বলে। আমরা তার নির্দেশ মানতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তাদের ২৫/৩০ জন সহচর ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। পরে ভার্সিটির সামনে অস্ত্র নিয়ে তারা শো ডাউন করলে হলের বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা বিষয়টি টের পেয়ে তাদের ধাওয়া করে।’

Barisal photo- Twenty injured after Barisal University students ransaked shops,vehicles over smoking cigarates before local elderly persons - 2হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্র সিফাত আহম্মেদ, মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র সবুজ আহম্মেদ, সাকিব, ফাইন্যান্স বিভাগের রিফাত, আইন বিভাগের রানা, নাইম আহম্মেদ মিষ্টু, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আবিদুর রহমান, মিরাজ হোসেনসহ ১০/১২জন আহত হয় বলে আহত শিক্ষার্থী আল আমিন দাবি করেন।

এদিকে, এ ঘটনায় প্রায় দুই ঘণ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে বিক্ষোভ ও এলাকার দোকান-পাট, রাস্তায় যানবাহন ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে অতি উৎসাহী কিছু শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা দিয়ে ক্যামেরা ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজীব জানান, স্থানীয় বখাটে জয়সহ বেশ কয়েকজন ক্যাম্পাসে মাদক সেবন করে আসছিল। বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হামলার শিকার স্থানীয় মুদি দোকানী সেলিম বলেন, ‘এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি সুরুজ মোল্লার সামনে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বখাটে ছাত্র ধূমপান করছিল। বিষয়টি এলাকার বাসিন্দা জয় দেখে তাদের অন্য কোথাও গিয়ে ধূমপান করতে বলে। এতে ওই শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে জয়ের ওপর চড়াও হয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা হঠাৎ করে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে দোকান লুট পাট করে। এ সময় ১০ জন আহত হয়।

ওই এলাকার মোবাইল রিচার্জের দোকানী মহসিন মোল্লা বলেন,‘ছাত্ররা আমাদের দোকান ভাঙচুরের সময় একটি কালো রঙের ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করে দোকানগুলো থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।’ তিনি আরও জানান,‘জমি বিক্রি করা দেড়লাখ টাকা আমার দোকনের ক্যাশ বক্সে রাখা ছিল। ক্যাশ বক্স ভেঙে সব টাকা নিয়ে গেছে ছাত্ররা।’

আমিনুল ইসলাম সবুজ হাওলাদার নামে এক মুদি দোকানীর অভিযোগ, শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর করে তার দোকান থেকে দশ হাজার টাকা নিয়ে গেছে।

/এমডিপি/