বিধি ভেঙে ৮ মাস ডেপুটেশনে শিক্ষক!

শিক্ষক সংকট, ফাইল ছবিকক্ষ স্বল্পতা, শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। কোনও রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলছে স্কুলটি। এরই মধ্যে স্কুলটির একজন শিক্ষক নিয়ম বহির্ভূতভাবে ডেপুটেশনে রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অথচ বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। শিক্ষা বিভাগের তদারকিও নেই বললেই চলে।  

মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না নিয়েই চর আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়িতা হালদার ২০১৭ সালের এপ্রিলে ডেপুটেশনে যান কাণ্ডপাশা গোহালকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। গত আট মাস ধরেই তিনি ওই স্কুলে কাজ করছেন। বরিশাল বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) এসএম ফারুকের মৌখিক অনুমতিতে তিনি ডেপুটেশনে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষার্থী অনুপাতে কাণ্ডপাশা গোহালকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষক থাকার কথা। তবে বর্তমানে স্কুলটিতে ৬ জন শিক্ষক রয়েছে। আর চর আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অনুপাতে সেখানে ৬ জন শিক্ষক থাকার কথা সেখানে আছেন ৫ জন। এতে করে পড়াশুনা ব্যাহত হচ্ছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লিখিত অনুমতি না নিয়ে জয়িতা হালদার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ‘ম্যানেজ’ করে বিধি ভঙ্গ করে  গত ১৯ এপ্রিল থেকে ডেপুটেশনে যান।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডেপুটেশনে চলে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট স্কুলে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। অথচ এই স্কুলের নামেই বেতন-ভাতা পাচ্ছেন জয়িতা।

এ ব্যাপারে জয়িতা হালদার বলেন, ‘যাতায়াতে অসুবিধার কারণে ডেপুটেশন নিয়েছি। সামনের জানুয়ারিতে বদলির চেষ্টা করবো।’ তবে চর আমতলী স্কুল থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।

কাণ্ডপাশা গোহালকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাছলিমা বেগম বলেন, ‘ তিনি  (জয়িতা হালদার) আমার কাছে এসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথা বলে আমাদের বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন। তবে কে এই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তা তিনি বলতে পারেননি। তার কাছে কোনও সরকারি আদেশ নেই।’

নলছিটির সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে তিনি ওই বিদ্যালয়ে আছেন। চর আমতলী স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাধবীলতা হালদার ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বেশ কয়েকবার ওই শিক্ষককে ফেরত নিতে আমার কাছে এসেছিল। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়ায় বিষয়টির সুরাহা হয়নি।’

বরিশাল বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) এসএম ফারুক বলেন, ‘ইভটিজিং সংক্রান্ত একটি ঝামেলার কারণে জয়িতা হালদারকে চর আমতলী স্কুল থেকে কিছুদিনের জন্য কাণ্ডপাশা গোহালকাঠি স্কুলে আনা হয়েছিল। এটা ডেপুটেশন নয়। শিগগিরই তাকে চর আমতলী স্কুলে ফেরত পাঠানো হবে।’