বরিশাল নগরীর এমএ গফুর সড়কের বাসায় গিয়ে দেখা গেছে মা পূর্ণা রানী মিস্ত্রি বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বাসায় চলছে স্বজনদের আহাজারি। সবাই অপেক্ষা করছেন কখন আসবে পিয়াসের মরদেহ। ঢাকায় ইউএস-বাংলা অফিসে আছেন কয়েকজন স্বজন।
পিয়াসের বোন-জামাই সুসময় সরকার বলেন, ‘পিয়াস এসএসসি পরীক্ষার পর থেকে অবসর সময়ে নানা জায়গায় ঘুরতে যেতো। ইতোমধ্যে ভারতে ছয়বার ও নেপালে আরও দুইবার ভ্রমণ করেছিল। কয়েকদিন আগে তার মেডিক্যাল কলেজের শেষবর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পরীক্ষা দিয়েই সে নেপাল ভ্রমণে যায়।’
পিয়াস রায়ের বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায় জানান, নেপালে পিয়াসের বন্ধুরা রয়েছে। এর আগেও দেশের বাইরে ঘুরতে গেছে পিয়াস। নেপালের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে সোমবার সকালে ও সর্বশেষ প্লেনে ওঠার আগে সোয়া ১১টার দিকে মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় তার।
পিয়াসের মা পূর্ণা রানী মিস্ত্রি বলেন, ‘১১ মার্চ রাতে বরিশাল থেকে লঞ্চযোগে ঢাকায় যায় পিয়াস। সে সময় তিনি তার ছেলেকে লঞ্চঘাটে দিয়ে আসেন। ১২ মার্চ সকালে ঢাকায় চাচাতো ভাইয়ের বাসায় গিয়ে ওঠে পিয়াস। সেখান থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নেপালের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে পিয়াস।’
মা পূর্ণা রানী মিস্ত্রি বলেন, ‘সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পিয়াসের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়েছে। তখন পিয়াস জানিয়েছিল— কিছুক্ষণের মধ্যে সে বিমানে উঠবে। এরপর আর তার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ হয়নি।’
পিয়াস রায় জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের মধুকাঠি গ্রামের বাসিন্দা সুখেন্দু বিকাশ রায়ের ছেলে। বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায় ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার চন্দ্রকান্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মা পূর্ণা রানী মিস্ত্রি বরিশাল সরকারি পলিটেকনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
দুই ভাই-বোনের মধ্যে পিয়াস রায় ছিল বড়। বোন শুভ্রা রায় রাজধানী ঢাকার নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
ছাত্রজীবনে ওই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন পিয়াস।