১২ দিন পর লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন পিয়াস

বরিশালে নিজের বাড়িতে পৌঁছেছে পিয়াস রায়ের মরদেহ১২ দিন পর কফিনবন্দি হয়ে নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছেন পিয়াস রায়। শুক্রবার (২৩ মার্চ) ভোররাত ৩টার দিকে তার মরদেহ বরিশাল নগরীর নতুন বাজার সংলগ্ন গফুর লেনের বাড়িতে পৌঁছায়। নেপালে যাওয়ার আগে মা পূর্ণা রানী হেঁটে গিয়ে লঞ্চে তুলে দিয়ে এসেছিলেন ছেলে পিয়াস রায়কে। সেই ছেলেকে বাবা নিয়ে এলেন কফিনে করে।

বরিশাল শহরে রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে সাইরেন বাজিয়ে পিয়াস রায়ের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স গফুর লেনের বাড়ির সামনে পৌঁছা মাত্র স্বজন ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন। বাড়ির নিচতলার গ্যারেজে লাশবাহী গাড়িটির গ্লাসের জানালা দিয়ে গাড়ির ভেতরে থাকা কফিনটি এক নজর দেখতে পেলেও নিশ্চুপ হয়ে চোখের জল ফেলা ছাড়া কারও আর কিছুই করার ছিলো না। পাগল প্রায় মাকে ঘরের ভেতরেই ধরে রেখেছিলেন স্বজনরা। ১২ মার্চ নেপাল যাত্রার আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মায়ের সঙ্গে ছেলের শেষ বারের মতো কথা হয়। পিয়াস জানিয়েছিলেন, কিছুক্ষণের মধ্যে বিমানে উঠবেন তিনি।  পিয়াস রায়

দুর্ঘটনার চারদিন পর ১৬ মার্চ দুপুরে বাবা সুখেন্দু বিকাশ রায় নেপালের গেলেও ছেলের মৃতদেহ শনাক্ত করতে পারেননি। পরে মৃতদেহ শনাক্তের প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে ১৯ মার্চ সুখেন্দু বিকাশ রায় দেশে ফিরে আসেন। তখন ২৩ বাংলাদেশির মরদেহ দেশে আনা হলেও পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় পিয়াস রায় সহ তিন জনের মরদেহ নেপালে থেকে যায়।

এরপর বুধবার (২২ মার্চ) পিয়াস রায়সহ তিনটি মরদেহ শনাক্ত হয়। বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) বিকালে নেপাল থেকে দেশে আনার পর  ঢাকায় মরদেহগুলো বুঝে নেন স্বজনরা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে পিয়াস রায়ের মরদেহ বুঝে নেওয়ার পর তা ঢাকা থেকে সরাসরি বরিশালে নিয়ে আসার কথা ছিল। তবে সহপাঠী ও শিক্ষকদের অনুরোধে রাত ১২টার দিকে পিয়াসের মরদেহ প্রথম গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে নেওয়া হয় । সেখানে পিয়াস রায়কে শেষ বিদায় জানায় সহপাঠী ও শিক্ষকরা। এরপর ভোররাত ৩টার দিকে বরিশালে ফিরে আসে পিয়াস রায়ের মরদেহ। শুক্রবার সকালে বরিশাল মহাশশ্মান ঘাটে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হবে বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে।

গত ১২ মার্চ নেপালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৭১ আরোহীর মধ্যে ৪৯ জন নিহত হন। বিমানের ৩৬ বাংলাদেশি আরোহীর মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। সবার লাশ দেশে নিয়ে আসা হয়েছে। আহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে সাত জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। দুই জনকে সিঙ্গাপুর ও একজনকে দিল্লিতে নেওয়া হয়েছে।  

আরও পড়ুন- প্রিয় কলেজে শেষবারের মতো পিয়াস রায়