বরিশালে বর্ষবরণের আয়োজনে পুতুল নাচের মুগ্ধতা

বরিশালে বৈশাখী উৎসবে পুতুল নাচের আয়োজনবাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নিতে উৎসবমুখর বিভিন্ন আয়োজনের অংশ হিসেবে বরিশালে আয়োজন করা হয় পুতুল নাচ। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী ও শ্রেণিপেশার মানুষ নির্মল আনন্দ উপভোগ করেন এই আয়োজনে। তাদের অনেকেই এই প্রথমবারের মতো দেখলেন পুতুল নাচ। তারা বলছেন, এমন আয়োজন নিয়মিত হলে মানুষের বিনোদনের সুযোগ তৈরি হবে। আর আয়োজকরা বলছেন, এই পুতুল নাচ নিয়ে তারা ছড়িয়ে পড়তে চান সারাদেশে।
বৈশাখের দ্বিতীয় দিন রবিবার (১৫ এপ্রিল) রাতে বরিশাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শব্দাবলী গ্রুপ থিয়েটারের বৈশাখী উৎসব আয়োজনের অংশ হিসেবে দেখানো হয় পুতুল নাচ। সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হয় এই আয়োজন। বরিশাল শহরসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও দলে দলে মানুষ এই পুতুল নাচ দেখতে হাজির হন।
শব্দাবলী গ্রুপ থিয়েটারের এই পুতুল নাচের আয়োজনে সহায়তায় ছিল বাংলাদেশ পুতুলনাট্য গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ড. রশীদ হারুন বলেন, ‘ধান-নদী-খালের বরিশালের মানুষ অনেক নরম ও গীতিময়। কথা বললে তারা অনেক মনোযোগ দিয়ে শোনেন। আজ তা দেখলাম। আমাদের সঙ্গে পুতুলের সখ্য জন্ম থেকেই। সেই পুতুলকে ব্যবহার করেই সময়ের উপযোগী করে শিক্ষামূলক উপস্থাপনা রেখেছিলাম আমরা। সবাই তা উপভোগ করেছে।’
পুতুল নাচের দুইটি চরিত্রড. রশীদ হারুন বলেন, ‘পুতুল নাচের আয়োজন ছিল মূলত শিশুদের কথা মাথায় রেখে। কিন্তু শিশুদের সঙ্গে আসা অভিভাবকরাও এই আয়োজন খুবই উপভোগ করেছেন। এই পুতুল নাচ নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সব এলাকায় যেতে চাই।’
মেয়েকে নিয়ে পুতুল নাচ দেখতে আসা আয়েশা বকুল বলেন, ‘এক সন্তানের মা হয়েছি। কিন্তু কোনোদিন পুতুল নাচ দেখার সুযোগ হয়নি। তাই আজ মেয়েকে নিয়ে পুতুল নাচ দেখতে এসেছিলাম। এদের উপস্থাপনা দেখে খুবই ভালো লেগেছে। নিয়মিত এমন আয়োজন করা হলে শিশুদের সুস্থ ও শিক্ষামূলক বিনোদনের একটি পথ তৈরি হবে।’
স্কুলছাত্রী আমিনা রাহমানও এর আগে কখনও পুতুল নাচ দেখেনি। তার ভাষ্য, ‘এতদিন কেবল পুতুল নাচের কথা শুনেছি, টিভিতে দুয়েকবার অল্প সময়ের জন্য দেখেছি। কিন্তু সামনাসামনি কোনোদিন দেখতে পাইনি। আজ পুতুল নাচ দেখে খুবই ভালো লাগছে। কখনও ভাবিনি, পুতুল নাচতে পারে, গাইতেও পারে। এ তো অসাধারণ।’
আরেক স্কুলছাত্র আসিফুর রহমান পুতুল নাচের কাহিনীতে যুক্ত শিক্ষামূলক বিষয়টিকে খুবই ইতিবাচক মনে করছে। তার বক্তব্য, ‘শিশুসহ সব বয়সী মানুষের জন্য উপদেশ ছিল এ পুতুল নাচের আয়োজনে। এটা আমাদের যেমন আনন্দ দিয়েছে, তেমনি অনেক কিছু শিখিয়েছেও। বরিশালে এ ধরনের আয়োজন বারবার হওয়া উচিত।’
আয়োজক বরিশাল শব্দাবলী গ্রুপ থিয়েটারের সাংগঠনিক সম্পাদক মিথুন সাহা বলেন, ‘বৈশাখী উৎসবের আয়োজনে প্রতিবছর বৈচিত্র্য রাখার চেষ্টা করে আসছে শব্দাবলী। এরই ধারাবাহিকতায় এবারে আমরা সবার জন্য উন্মুক্ত পুতুল নাচের আয়োজন করেছি। দীর্ঘদিন এই অঞ্চলে পুতুল নাচের কোনও আয়োজন ছিল না। ফলে এটা মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছ।’
আরও পড়ুন-
খালেকের মনোনয়নপত্র বাতিল চান মঞ্জু
ধুনটে বাঙালি নদীর চর কেটে বালু বিক্রি করছে প্রভাবশালীরা