ফল খারাপ হওয়ায় প্রধান শিক্ষক তালাবদ্ধ!

প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা দিচ্ছেন অভিভাবকরাএসএসসি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় বরিশাল নগরীর জগদীশ সারস্বত বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ আলমকে তার কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা। রবিবার (৬ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

রবিবার প্রকাশিত এসএসসির ফল দেখতে বেশ কিছু শিক্ষার্থী স্কুলে আসে। সঙ্গে তাদের অভিভাবকরাও ছিলেন। দুপুর ১টার পরে স্কুলের শিক্ষকদের কক্ষের পাশে দেয়ালে ফলাফল টাঙিয়ে দেওয়া হয়। আশানুরূপ ফল করতে না পারায় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা দিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সালমা কবির নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘পরীক্ষার আগ মুহূর্তে নিয়মিত ক্লাস হয়নি স্কুলে। প্রধান শিক্ষক কোচিংয়ের নামে দেড় হাজার টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়েছেন। আর ক্লাস করিয়েছেন কলেজের ছাত্রদের দিয়ে। তারা সৃজনশীলের বিষয়ে কিছুই শিক্ষার্থীদের বোঝাতে পারেনি। এজন্যই ফল খারাপ হয়েছে।’

প্রধান শিক্ষক শাহ আলম তাকে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘ফলাফল খারাপ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা কক্ষে তালা দিলেও আমি সেখানে ছিলাম না।’

তিনি বলেন, ‘মাত্র চার মাসের মতো হয়েছে আমি এ স্কুলে যোগ দিয়েছি। এ স্কুলের কোনও শিক্ষার্থীই এ-প্লাস পাওয়ার মতো ছিল না। সে হিসাব করেই পরীক্ষার্থীদের পড়াশুনায় বাড়তি খেয়াল রাখতে হয়েছে। তারপরেও যে ফলাফল হয়েছে তা সন্তোষজনক।’

কোচিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোচিং ক্লাস করানো হয়েছে এটা ঠিক। তবে তার জন্য দেড় হাজার টাকা কোনও শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জোর করে নেওয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে স্কুলের সহকারী শিক্ষক আব্দল মজিদ, এমদাদুল্লাহসহ অন্য শিক্ষকরা জানান, দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের এনে কোচিং করানো হয়েছে। কারণ প্রধান শিক্ষকের ধারণা হচ্ছে আমরা এ ব্যাপারে অজ্ঞ।

তারা আরও জানান, গত বছর এ স্কুল থেকে ২০০ জনের মতো শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ১৮ জন জিপিএ-৫ পায় এবং অকৃতকার্য হয় মাত্র ১৮ জন। সেখানে এ বছর ১৮৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৪৬ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে আর জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র চারজন।