বরিশালে কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্টসহ চারজনের ওপর হামলার অভিযোগ

বরিশাল সিটি করপোরেশন

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জামায়াত প্রার্থীর এজেন্টসহ চার সমর্থকের ওপর আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা হামলা করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের স্বতন্ত্র কাউন্সিলর প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন মাসুম এ অভিযোগ করেন। ২২ জুলাই সকালে সংঘটিত এই ঘটনার পর থানা ও নির্বাচন কমিশনে তিনি লিখিত অভিযোগ করেন।

রবিবার দুপুরে এঘটনার বিচার চেয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এসময় তিনি অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, রবিবার সকাল সাড়ে সাতটায় ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী (ঘুড়ি প্রতীক) অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন মাসুমের প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট আবদুর রউফ ও দৈনিক সংগ্রামের বরিশাল প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট শাহে আলম নগরীর কালুশাহ সড়ক এলাকায় গেলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঠেলাগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী তৌহিদুর রহমান ছাবিদের নেতৃত্বে একদল ক্যাডার তাদের উপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী সালাউদ্দিন মাসুমসহ অপর এজেন্ট ও সমর্থক মিরাজুল ইসলাম, আবদুল মান্নান মিয়া, রুহুল আমিন, সাকলাইন মোস্তাক ও এমরান সুমনসহ অন্যরা ঘটস্থলে গেলে তাদের উপরও চড়াও হয়  তৌহিদুর রহমান ছাবিদ ও তার ক্যাডাররা। এক পর্যায়ে তাদের চারজনকে আটক করে মারধর করে পুলিশের কাছে তুলে দেয় ছাবিদ। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান।

এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন মাসুম বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে বিশ্বাসী। তাই আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আশা করি নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসন আমাদের অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেবেন।

অন্যদিকে তৌহিদুর রহমান ছাবিদ অভিযোগ করেন অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন মাসুম তার নির্বাচনি এলাকায় বহিরাগতদের সমাগম ঘটিয়েছে, এজন্য তাদের মেরে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।

এই অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন মাসুম বলেন, আমার প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট আবদুর রউফ, মিরাজসহ অন্য সবাই আমার নির্বাচনি এলাকা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। এর স্বপক্ষে প্রমাণ হিসাবে তিনি তাদের ভোটার তালিকা নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেন এবং তা সাংবাদিকদের দেখান।

একই সাথে তিনি নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানান।

এদিকে অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন মাসুমের নির্বাচনি এজেন্ট ও সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ২০ দলীয় জোটের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. মজিবর রহমান সরোয়ার, বরিশাল মহানগর জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মুয়ায্যম হোসাইন হেলালসহ বরিশাল ২০ দলীয় জোটের  শীর্ষ নেতারা।

বিবৃতিতে তারা বলেন, নির্বাচন কমিশন বরিশালে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া কাউকে গ্রেফতার না করতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা থাকলেও তার কোনও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ধানের শীষের পথসভা থেকে ফেরার পথে মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, অথচ তার বিরুদ্ধে কোনও ওয়ারেন্ট নেই। তিনি সবকটি রাজনৈতিক মামলায় জামিনে রয়েছেন।

তারা বলেন, বরিশালে সরকারি দলের ক্যাডাররা পুলিশের ওপর হামলা করলেও তার কোনও বিচার হচ্ছে না। এমন কঠিন অবস্থায় সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান ২০ দলীয় জোটের নেতারা।