বরিশালে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

01শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি উপলক্ষে বরিশালে মন্দির ও মণ্ডপের সাজসজ্জা ও প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর ও মৃৎশিল্পীরাসহ আয়োজক কমিটির সদস্যরা। পূজা জাঁকজমকভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বরিশাল মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন। তিনি বলেন, ‘বরিশাল মহানগরে এবারে সার্বজনীন ৩৮টি পূজা মণ্ডপ রয়েছে এবং ব্যক্তিগত রয়েছে ৫টি পূজা মণ্ডপ। গতবারের পূজা মণ্ডপের সংখ্যার থেকে এবারে ৩টি মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে।’ এছাড়া বরিশাল জেলায় আরও ৫৯৮টি মণ্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।

স্বপন আরও বলেন, ‘মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন পূজা-মণ্ডপের শান্তি-শৃঙখলা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশ রক্ষায় পূজা-কমিটির সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবকরা সহযোগিতা করবেন।’

গত কয়েকদিন ধরে বরিশালের শ্রী শ্রী শংকর মঠ, জগন্নাথ দেবের মন্দির, ফলপট্টি, নতুন বাজার, কাঠপট্টি, বাজার রোড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এসব এলাকার পূজা আয়োজনের পাশাপাশি প্রতিমা সুন্দর করার জন্য মৃৎশিল্পী ও কারিগরদের মধ্যে অনেকটা প্রতিযোগিতাও আছে।

02মায়ের প্রতিমা সুন্দর হলে পূজাটাও সুন্দর কাটে বলে জানিয়ে শংকর মঠ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কিশোর কুমার দে বলেন, ‘দুর্গা পূজার মূল আকর্ষণীয় হলো মা দুর্গার প্রতিমা। আর বলা যায়, এই প্রতিমা তৈরির মধ্যে দিয়েই দুর্গা উৎসবের সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তাই প্রতিমা তৈরিতে কারিগরদের সেই ধরনের নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে।’

কারিগর ও মৃৎশিল্পীরাসহ আয়োজক কমিটির মতে, গতবারের থেকে এবার নতুন আঙ্গিকে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন তারা। আবার অনেকেই ভারতীয় স্টাইলেও প্রতিমা তৈরি করছেন। অনেকে বাঙালি সাজে মা দুর্গাকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করছে।

তবে কাঁচামালের দাম বাড়ায় এবার প্রতিমা তৈরিতে গত বছরের থেকে খরচ বাড়বে বলে জানিয়েছেন শ্রী শ্রী শংকর মঠ মন্দিরে দুর্গা প্রতিমার কারিগর বাকেরগঞ্জের কলসকাঠি এলাকার সুমন পাল।
নগরের সদর রোডস্থ জগন্নাথ দেবের মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির কোষাধ্যক্ষ গোপাল সাহা জানান, এবারে তাদের দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে ফরিদপুর থেকে সুজন পাল নামে কারিগরকে আনা হয়েছে। তারা আশা করছেন এবার তাদের দুর্গা মায়ের প্রতিমা ভক্তদের আকর্ষণ আরও বাড়াবে। এছাড়াও দুর্গা প্রতিমা বাদেও বেশ কয়েকটি আলাদা আলাদা প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন অসুর ও দেব দেবতাদের নিয়ে। সব মিলিয়ে প্রতিমা তৈরিতেই তাদের প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে এবং সেই অনুযায়ী কারিগর কাজ করছেন।

প্রতিমা তৈরির কজের শেষের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে যাবে আলোকসজ্জার কাজ। বিগত বছরগুলোর মতো পূজা মণ্ডপ ছাড়াও মণ্ডপ সংলগ্ন সড়কে আলোকসজ্জা করা হবে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোশাররফ হোসেন বলেন, পূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পূজা কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরাও এ বিষয়ে সহযোগিতা করবেন।