বরগুনায় রোগীর ছেলেকে মারধর করলেন চিকিৎসক (ভিডিও)

চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহ

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আনোয়ার উল্যাহর বিরুদ্ধে এক রোগীর ছেলেকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১৩ মে) বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের মধ্যেই এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। একজন চিকিৎসকের এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বরগুনার সুশীল সমাজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে মারধরের ঘটনায় আহত হয়ে শুক্রবার (১০ মে) সকালে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন দুলিয়া বেগম। এরপর সোমবার (১৩ মে) বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রহিমা বেগম অসুস্থ দুলিয়া বেগমের ছেলে জিলানীকে খবর দেয়। জিলানী দ্রুত হাসপাতালের এসে তার মাকে মেঝেতে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে নার্সদের ডেকে নিয়ে আসেন। নার্সরা চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহকে ডেকে নিয়ে আসলে জিলানী তার মায়ের এ অবস্থার কারণ জানতে চান। এ নিয়ে চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহর সঙ্গে তার বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চিকিৎসক সবার সামনে জিলানীকে মারধর করেন। এ সময় তার মাকেও লাঞ্ছিত করা হয়।

পাথরঘাটা উপজেলা নাগরিক অধিকার ফোরামের সভাপতি সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া একটি সাংবিধানিক অধিকার। মায়ের অসুস্থতার কারণে সন্তান ছুটে এসে কিছুটা অসৌজন্যমূলক আচরণ করলেও ডাক্তারের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া উচিত ছিল। একজন প্রথম শ্রেণির নাগরিক এরকম রোগীর ছেলের গায়ে হাত দিয়ে মারধর করাটা দুঃখজনক।’

দুলিয়া বেগমের ছেলে জিলানী বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমার মা হঠাৎ করে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে শুনে তাকে দেখতে আসি। এসে দেখি মা মেঝেতে পড়ে আছেন। পরে নার্সদের ডাকলে তারা ডাক্তারকে ডেকে নিয়ে আসে। এ সময় ডাক্তার আমাকে কক্ষ থেকে বের হতে বললে আমি না যাওয়ায় আমাকে মারধর এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

এ বিষয়ে চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহ বলেন, ‘আমি ওই ছেলের মায়ের কাছ থেকে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার নিতে চাইলে ওই ছেলে আমার ওপর আক্রমণ করে। আমি এর প্রতিবাদ করেছি মাত্র।’

এ ঘটনায় পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুমুল হক খানকে ফোন করা হলে তার স্ত্রী ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান, তার স্বামী তিন দিনের ছুটিতে আছেন। আগামী রবিবার ছাড়া তিনি কোনও কথা বলতে পারবেন না।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুমায়ুন শাহীন খান বলেন, হাসপাতালে এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে তা দুঃখজনক। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।

এ সময় তার কাছে পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অসুস্থতার কারণে তিনি আমার কাছ থেকে মৌখিকভাবে তিন দিনের ছুটি নিয়েছেন।