ভোলা জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও ভোলা জেলা জুয়েলারি মালিক সমিতির সেক্রেটারি অবিনাষ নন্দী জানান, বিধান মজুমদার ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট থানাধীন রৌদের হাটে জুয়েলারি ব্যবসা করেন। জুয়েলারির নাম মা জুয়েলার্স। তবে বাড়ি লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ গ্রামে।
বিধানের বাবা বিনয় ভূষণ মজুমদার বলেন, ‘গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর আমাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মা জুয়েলার্স থেকে বিধান ও বিপ্লবের চাচাতো ভাই সাগরকে সিভিল পোশাকধারী ৭/৮ জন লোক ডিবির পরিচয় দিয়ে কালো একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এর পর গতকাল লালমোহন ও চরফ্যাশন পুলিশ সার্কেল কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও সদস্য তাদের তুলে আনেননি।’
রোদ্রের হাট এলাকার ইউপি সদস্য আশ্রাফুল আলম টুলু বলেন, ‘বিধানের স্ত্রী শিল্পী আমার কাছে ফোন করে জানান সোমবার সন্ধ্যার পর তার স্বামীর পরিচালিত মা জুয়েলার্স থেকে বিধান ও সাগরকে একটি কালো গাড়ীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়।’
স্থানিয় আবুবকরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন জমাদার জানান, ‘রৌদ্রেরহাট বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী আমাকে জানান, র্যা ব এবং ডিবির পরিচয়ে বিধানকে গাড়িতে তুলে। এ সময় কয়েকজন ব্যবসায়ী বিধানকে কী কারণে আটক করা হয়েছে জানতে চাইলে তারা জানায়, বোরহানউদ্দিনের ঘটনায় বিপ্লবের ভগ্নিপতি বিধান ও তার চাচাতো ভাই সাগরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাচ্ছে।’
চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সামছুল আরেফিন বলেন, বিধান ও সাগরকে তুলে নেয়ার ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান পাটওয়ারী আরো জানান বিধান ও সাগরকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নেওয়ার ঘটনা তার জানা নেই। তিনি বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার দুপুরে লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ গ্রামের বিনয় ভুষণ মজুমদার একটি জিডি করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, তার ছেলে বিধান মজুমদার ও দোকানের কর্মচারী সোমবার সকালে বাড়ি থেকে দোকানের উদ্দেশে রওনা হয়, এরপর থেকে তারা নিখোঁজ।’
ওসি আরও জানান, তারা বেতার বার্তার মাধ্যমে দেশের সব থানায় এ নিখোঁজের খবর জানাচ্ছেন এবং বিষয়টি তদন্ত করছেন। তিনিও নিশ্চিত করেছেন বিধান মজুমদার বোরহানউদ্দিনের সেই বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভর ভগ্নিপতি।
উল্লেখ্য, বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভর ফেসবুক মেসেঞ্জার থেকে কথিত কটূক্তির স্ক্রিনশট ফেসবুকে ছড়িয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। এর জের ধরে গত রবিবার (২০ অক্টোবর) বোরহানউদ্দিনে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে চার জন নিহত ও শতাধিক আহত হন।