প্রেমের ভান করে তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা, যুবকের যাবজ্জীবন

বরগুনায় প্রেমের ভান করে এক তরুণীকে (২১) ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মো. শাহীন (২৫) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।

রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এই রায় দেন। এছাড়া ৩২৬ ধারায় ১০ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৩০৭ ধারায় ১০ বছরের কারাদনণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড তাকে দিয়েছেন আদালত।

শাহীন বরগুনা পৌর শহরের এলাকার উকিল পট্টির বাসিন্দা মৃত সফিজ উদ্দিন আহমেদের ছেলে।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামি শাহীনের সঙ্গে বরগুনা সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া এলাকার এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি তরুণীর পরিবার জানতে পেরে তাকে শাহীনের সঙ্গে মেলামেশা করতে নিষেধ করেন। এই ঘটনার পর তরুণী তার এক স্বজনের বাড়ি বেড়াতে যান, সেখান থেকে ওই তরুণী কুয়াকাটায় যান। পরের দিন সেখান থেকে ফিরে বরগুনা শহরের টাউনহল এলাকায় শাহীনের সঙ্গে দেখা হয়। সেখানে অনেকক্ষণ কথাবার্তা শেষে আসামি শাহীন তাকে নিয়ে ঢাকা যেতে চাইলে ওই তরুণীও রাজি হন। পরে রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে শাহীন একটি বটিসহ মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়। শাহীন ওই তরুণীকে নিয়ে ঢাকার বদলে বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের পশ্চিম ধুপতি এলাকার পুরনো ইটভাটা সংলগ্ন খাকদন নদীর পাড়ে নিয়ে যায় এবং বঁটির ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে শাহীন তার হাতে থাকা বঁটি দিয়ে তরুণীকে ইচ্ছেমতো কুপিয়ে মারা গেছে ভেবে নদীর পাড়ে ফেলে চলে যায়।

পরদিন সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় তরুণীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় তরুণীর বাবা বাদী হয়ে ২০০৮ সালের জুন বরগুনা সদর থানায় শাহীনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০০৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট। এই রায়ের মাধ্যমে সমাজের উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির ছেলেরাও সতর্ক হবে বলে আশাকরি।