শুধু নারী রোগীদের জন্য করোনা ইউনিট চালুর সিদ্ধান্ত

প্রতিনিয়ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বরিশাল নগরীর আরও দুইটি হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এসব ইউনিট চালুর প্রস্তাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুমোদন পেলেই রোগী ভর্তি শুরু হবে। এর মধ্যে একটি হাসপাতালের করোনা ইউনিট শুধুমাত্র নারী রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড করা হবে, অন্যটিতে নারী-পুরুষ উভয় রোগীই চিকিৎসা নিতে পারবেন।

করোনা আক্রান্ত নারী রোগীদের জন্য নগরীর বিএম স্কুল সংলগ্ন নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ২০টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া নগরীর কালিজিরা এলাকার বেসরকারি সাউথ অ্যাপোলো মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মুন্সি গ্যারেজ এলাকার আম্বিয়া হাসপাতালের যেকোনও একটিকে করোনা রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড করার প্রস্তাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস, পরিবার পরিকল্পনার বিভাগীয় পরিচালক আবদুস সালাম, সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান, শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে কলেজের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম, সাউথ অ্যাপোলো মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. জহিরুল হক প্রমুখ।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল জানান, সরকার সারাদেশের সব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০টি করে শয্যা করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সে অনুযায়ী বরিশাল বিভাগের সব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০টি করে শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলার ৯ উপজেলার হাসপাতালে ২০টি করে ১৮০টি শয্যা প্রস্তুত রয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ‍ইসলাম বলেন, ‘সাউথ অ্যাপোলো মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও আম্বিয়া হাসপাতালের মধ্যে একটিকে করোনা রোগীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল করা হবে। এ জন্য বুধবার (৪ আগস্ট) ওই দুই হাসপাতাল পরিদর্শন করে এর মধ্যে একটিকে বিশেষায়িত হাসপাতালের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে কার্যক্রম শুরু হবে। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে করোনা আক্রান্ত নারী রোগীদের জন্য ২০ শয্যার করোনা ইউনিট চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

এদিকে, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে শয্যা রয়েছে ৩০০টি। এর মধ্যে আইসিইউ সেবা পাচ্ছেন মাত্র ২৫ জন রোগী, ১৫ জন পাচ্ছেন হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সেবা এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন সেবার আওতায় রয়েছেন ৮৫ রোগী। 

অভিযোগ রয়েছে, বাকি রোগীর প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। যথা সময়ে অক্সিজেন সুবিধা না পেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন মুমূর্ষু রোগীরা। এ অবস্থায় করোনা আক্রান্তদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রস্তুতে জরুরি সভায় বসলো জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরসহ সংশ্লিষ্টরা।