তালাকের কারণ জানতে চাওয়ায় স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার পর লাশ ডোবায় ফেলে দিয়েছেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেরমহল গ্রামে। গত ১৩ অক্টোবর ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেরমহল গ্রামে স্বামীর বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে গৃহবধূ পারভীন আক্তারের (২৪) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন থেকেই পারভীনের স্বামী তানজিল হাওলাদার (২৬) পলাতক ছিলেন। এ ঘটনায় পরদিন ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠি সদর থানায় একটি মামলা করা হয়।
মামলার ১৮ দিন পরে মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) পারভীন হত্যার মূল আসামি স্বামী তানজিল হাওলাদারকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) আসামিকে ঝালকাঠিতে এনে আদালতে তোলা হলে তিনি ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে দোষ স্বীকার করেন। এরপর জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইমরানুর রহমান আসামি তানজিলকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ব্রিফিং করেছেন ঝালকাঠি জেলা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার অরিত সরকার। তিনি একটি লিখিত বার্তায় আসামির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে জানান, তানজিল হাওলাদার ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেরমহল গ্রামের মৃত আবু হানিফ হাওলাদারের ছেলে। চলতি বছরের ১২ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টায় স্ত্রী পারভীন আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গোপন করে ঢাকা পালিয়ে যান। পরিকল্পিতভাবে স্ত্রীকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঝালকাঠি সিআইডির এসআই মো. শাহাদাৎ হোসেন জানান, আড়াই বছর আগে চাঁদপুর সদর উপজেলার জিন্নাত আলী মোল্লার মেয়ে পারভীন আক্তারের সঙ্গে তানজিল হাওলাদারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক বছর আট মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত এক বছর ধরে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে বিরোধ চলছিল পারভীনের। তানজিল হাওলাদার এবং শাশুড়ি সুলতানা বেগম প্রায় পারভীনকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন এবং বাড়ি থেকে বের করে দিতেন। গত ৯ অক্টোবর পারভীন শ্বশুর বাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় তার মায়ের কাছে চলে যান। এরপর পারভীন জানতে পারেন যে, তার স্বামী তাকে তালাক দিয়েছেন। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে ঝালকাঠি এসে স্বামীর বাড়ির পাশের একটি বাড়িতে ওঠেন। এরপর ১৩ অক্টোবর রাতে পারভীনের ফোনে কল দিয়ে তাকে বাইরে যেতে বলেন তানজিল। সে সময় বাড়ির পাশের খালি জায়গায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পারভীনকে গলাটিপে হত্যা করে লাশ ডোবায় ফেলে পালিয়ে যান তানজিল।