বিকাশের পিন নম্বর নিতে ডিজিটাল ফাঁদ

বিকাশের গোপন নম্বর বের করে নিতে ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে একটি চক্র। এ জন্য উপবৃত্তি পেতে মোবাইলে এসএমএস করা হয়েছে। সেখানে যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বরও দেওয়া হয়।

মেসেজে উল্লেখ করা হয়, ‘প্রিয় শিক্ষার্থী (COVID-19)-এর কারণে উপবৃত্তির ৪২০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। টাকা গ্রহণের জন্য নিম্নোক্ত শিক্ষাবোর্ডের নম্বরে যোগাযোগ করুন। মোবা: ০১৮৪৬৫৮২২৪৭, গোপন নম্বর: ১২৩০০।

শনিবার (০৬ নভেম্বর) দুপুরে মেসেজ পায় বরিশাল উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র জুলিয়ান প্রত্যয়। সে নগরীর নিউ সার্কুলার রোড এলাকার বাসিন্দা জুয়েল সরকারের ছেলে।

জুয়েল সরকার বলেন, ৪২০০ টাকা উপবৃত্তি পেয়েছে বলে আমার ছেলের মোবাইল নম্বরে মেসেজ দেওয়া হয়। মেসেজ আসা নম্বরে কল দিয়ে পরিচয় জানতে চাইলে গাজীপুর শিক্ষাবোর্ড থেকে বলছেন বলে জানান। তিনি প্রথমে মেসেজটি ডিলিট করার নির্দেশ দেন। এ সময় স্ক্রিনশট রেখে মেসেজ ডিলিট করি। এর ফাঁকে ওই ব্যক্তি আমাকে জানান প্রতিমাসে আপনার ছেলে ৪২০০ টাকা করে উপবৃত্তি পাবে। তখন ওই ব্যক্তি বলেন আপনার নম্বরটি কী বিকাশ। হ্যাঁ উত্তর দিলে ওই ব্যক্তি মোবাইলটি সচল রাখার নির্দেশ দিয়ে আরেকটি মোবাইল নম্বর দিতে বলেন। বাসার আরেকটি মোবাইল নম্বর তাকে দেওয়া হলে ওই নম্বরে কল দিয়ে ৪২০০ টাকা দিয়ে বিকাশের গোপন নম্বর গুণ করতে বলেন। এরপর ফলাফল যা আসছে, তা দুুই অক্ষর করে বলার নির্দেশ দেন। তখন আমার ছেলে আমাকে জানান ফলাফল না দেওয়ার জন্য। কারণ ওই ফলাফল দিয়ে ৪২০০ কে ভাগ দিলে গোপন নম্বরটি বের হয়ে যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রতারককে বকাঝকা করি। এরপর মোবাইল সংযোগ কেটে দেয়। প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ার পর ওই নম্বরে আর কল যাচ্ছে না। পরে জানতে পারি এভাবে বহু মোবাইলে মেসেজ দেওয়া হয়েছে।

বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, এ ধরনের প্রতারণা বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে। আমি নিজেও এ ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছি। এ ধরনের প্রতারণা শুধু শিক্ষাবোর্ডের নামে নয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নামেও করেছে চক্রটি।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জ্ঞাতার্থে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ প্রতারণার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। যাতে করে কেউ প্রতারণার শিকার না হয়। এরপরও আর্থিক যেকোনও লেনদেনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার আহ্বান জানান চেয়ারম্যান।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, এমন প্রতারণার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে থানায় জিডি ও মামলা করতে হবে। যাতে ওই প্রতারককে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা যায়। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনও মেসেজ পেলে তা যাচাই-বাছাই করে টাকা লেনদেনের পরামর্শ দেন তিনি।