গোপালগঞ্জে হত্যা বরিশালে লাশ, পাশে কাঁদছিল ১০ মাসের শিশু

পারিবারিক কলহের জের ধরে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করেছে এক স্বামী। ঘটনার তিন ঘণ্টার ব্যবধানে স্বামী তামিম শেখকে গোপালগঞ্জ থেকে আটক করেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ। 
 
বুধবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বাইপাস মহাসড়কের পাশে ঘেরের পাড় থেকে রাশিদা বেগমের (৩৫) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত রাশিদা আগৈলঝাড়ার নগরবাড়ি গ্রামের মৃত করিম শাহের মেয়ে। উপজেলার ১ নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় তারা বসবাস করতেন। তামিম শেখ গোপালগঞ্জের বেদ গ্রামের আনোয়ার শেখের ছেলে।
 
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। দুই বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। দুজনের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তামিমের আগের স্ত্রীর দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। বর্তমানে রাশিদার ঘরে ১০ মাস বয়সী তানিম নামে এক পুত্রসন্তান রয়েছে।
 
আগৈলঝাড়া থানার ওসি গোলাম সরোয়ার বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বুধবার রাতে উপজেলার বাইপাস মহাসড়কের পাশে ঘেরের পাড় থেকে রাশিদার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। একই সময় কান্নার আওয়াজ পেয়ে রাশিদার ১০ মাস বয়সী শিশুপুত্র তানিমকে মায়ের লাশের একটু দূরে সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের পরপরই ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে রাশিদার স্বামীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।  
 
অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তামিমকে তার বাড়ি গোপালগঞ্জের বেদ গ্রাম থেকে রক্তমাখা জুতা ও জামা পরাসহ আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তামিম স্ত্রী রাশিদাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তামিমকে নিয়ে হত্যার ঘটনাস্থল গোপালগঞ্জের বেদগ্রাম পরিদর্শন এবং হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়।
 
ওসি সরোয়ার আরও বলেন, তামিম স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে বুধবার রাশিদাকে নিয়ে গোপালগঞ্জের একটি হোটেলে অবস্থান করে। রাত ৮টার পর সেখান থেকে বের হয়ে সহযোগীদের সহায়তায় রাশিদাকে হত্যা করে। ওই রাতে একটি সিএনজি ভাড়া করে আগৈলঝাড়ার বাইপাস মহাসড়কের পাশে রাশিদার লাশ ও তার শিশুসন্তানকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
 
হত্যার আলামত উদ্ধার ও অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই- বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।