দাদা-দাদির পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হাদিসুর

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেট হামলায় নিহত প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০টায় বেতাগী উপজেলার কদমতলা গ্রামে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাদা-দাদির পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। 

জানাজায় ইমামতি করেন বেতাগী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জিয়াউল হক। 

এ সময় বরগুনা-১ আসনের সাংসদ ধীরেন্দ্রনাথ দেবনাথ শম্ভু, বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান, ইউএনও মো. সুহৃদ সালেহীন, পৌর মেয়র এবিএম গোলাম কবির, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মহা ব্যবস্থাপক আবু সুফিয়ানসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

গ্রামের বাড়িতে লাশ পৌঁছার পর স্বজনদের আহাজারিএরআগে, সোমবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে মরদেহ হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছায়। লাশ গ্রহণ করেন হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স।

বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুর ১টার দিকে লাশ নিয়ে হাদিসুরের গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার উদ্দেশ্যে রওনা হন স্বজনরা। রাত ৯টা ৪০ মিনিটে স্বজনরা তার লাশ নিয়ে বরগুনার বেতাগী উপজেলার কদমতলা গ্রামে পৌঁছান।

গ্রামের বাড়িতে লাশ পৌঁছার পর স্বজনদের আহাজারিলাশ পৌঁছানোর পর সেখানে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। লাশ দেখে আর্তনাদ আর কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। তার মা রাশিদা বেগম, বাবা আব্দুর রাজ্জাক ও ভাই তরিকুল ইসলাম লাশ দেখে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। 

তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে হাদিসুর রহমান ছিলেন দ্বিতীয়। বাবা আব্দুর রাজ্জাক অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক, মা রাশিদা বেগম গৃহিণী। বড় বোন সানজিদা আক্তার পেশায় নার্স। ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স ঢাকায় লেখাপড়া করেন। মেজো ভাই তরিকুল ইসলাম থাকেন পটুয়াখালীতে।
 
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি। সেখানে নোঙর করা অবস্থায় গত ২ মার্চ জাহাজটি রকেট হামলার শিকার হয়। ওই হামলায় প্রাণ হারান জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান।