স্ত্রীর করা যৌতুকের মামলায় চিকিৎসক কারাগারে

যৌতুকের মামলায় চিকিৎসক স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে গ্রেফতার চিকিৎসক টিপু সুলতানকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করায় মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) রাতে মামলাটি করেন তার চিকিৎসক স্ত্রী। আসামি টিপু সুলতান গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল কর্মকর্তা। মামলা পরপরই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হেলালউদ্দিন বলেন, ‘২০২১ সালের ১৩ আগস্ট গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া গ্রামের বাদশা ফকিরের ছেলে ডা. টিপু সুলতানের সঙ্গে কুমিল্লা জেলার কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার এক চিকিৎসক তরুণীর বিয়ে হয়। এরপর থেকেই স্বামী তার বাড়ির নির্মাণাধীন ভবনের কাজ সম্পন্নে স্ত্রীর কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে।’

তিনি বলেন, ‘দাবি করা টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রায়ই স্ত্রীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। গত ৩ এপ্রিল যৌতুকের টাকার দাবিতে গৌরনদী এবি সিদ্দিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তৃতীয় তলায় ফিজিওলজি ল্যাবের রুমের ভেতর স্ত্রীকে আটকে শারীরিক নির্যাতন চালান স্বামী। এরপর ৪ এপ্রিল রাতে গ্রামের বাড়ি উপজেলার নলচিড়া গ্রামে স্ত্রীকে আবার আটকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখেন। স্বামীর বাড়িতে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে পালিয়ে এসে গত ১২ এপ্রিল দুপুরে গৌরনদী থানায় স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়। তাৎক্ষণিক পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।’

গ্রেফতার চিকিৎসক টিপু সুলতানকে দুপুরে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান।

আদালতে নেওয়ার পথে আসামি টিপু সুলতান দাবি করেন, ‘আমার স্ত্রী আমাকে বদলি হয়ে কুমিল্লা যেতে চাপ সৃষ্টি করেছিল। কুমিল্লা নিয়ে আমার পরিবার থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছিল। এতে আমি রাজি না হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।’

গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়্যিদ মো. আমরুল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি বরিশাল জেলা সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে। অতি তাড়াতাড়ি মেডিক্যাল কর্মকর্তা টিপু সুলতানকে সাময়িক বরখাস্ত করাসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’