কাঁচা মাটি দেখে ৯৯৯-এ কল, খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো লাশ

টাকা সংক্রান্ত বিষয়ে এক যুবকের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল ৫৫ বছর বয়সী রওশন আরার। মঙ্গলবার (৩ মে) ঈদের রাতে নাতিদের এগিয়ে দেওয়ার পর নিখোঁজ হন এই নারী। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও সন্ধান মেলেনি। বুধবার (৪ মে) দুপুরে যুবক হুমায়ন হাওলাদারের (৩২) বাড়ির পাশের জঙ্গলে কাঁচা মাটি দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেন স্থানীয়রা। পুলিশ এসে মাটি একটু খুঁড়তেই ওই নারীর লাশ পাওয়া যায়।

বুধবার (৪ মে) দুপুরে বরগুনার সদর উপজেলার কালিরতবক এলাকার একটি জঙ্গল থেকে মাটি খুঁড়ে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত রওশন আরা একই এলাকার মৃত জয়নুদ্দিনের স্ত্রী। একই এলাকার প্রতিবেশী জালাল হাওলাদারের ছেলে হুমায়ন হাওলাদ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের পরিবার। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তসহ তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনদের দাবি, কালিরতবক গ্রামের জালাল হাওলাদারের ছেলে হুমায়ুন প্রায়ই রওশন আরার কাছ থেকে টাকা ধার নিতেন। টাকা নিয়ে আর ফেরত না দেওয়ার তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। এতে রওশনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এরপর রওশন আরার ঘর থেকে ২০ হাজার টাকা চুরি হয়।

ঈদের দিন রাতে নাতিদের এগিয়ে দেওয়ার সময় বড় মেয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন তিনি। পথে কে বা কারা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় অপরপ্রান্ত থেকে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুনতে পান নিহতের বড় মেয়ে। সারা রাত খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান মেলেনি। দুপুরের দিকে হুমায়নের বাড়ি সংলগ্ন জঙ্গলে কাঁচা মাটি দেখতে পেলে কয়েকজনের সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে। 

রওশন আরার মেয়ে রিনা বেগম দাবি করেন, ‘হুমায়ন লোকজন নিয়ে আমার মাকে হত্যা করেছে। আমরা বিচার চাই। পুলিশের কাছে অনুরোধ অরে অ্যারেস্ট করে ওর সঙ্গে কারা ছিল, তাদের খুঁজে বের করুন।’

ছেলে জব্বার হাওলাদার দাবি করেন, ‘ঘর থেকে ২০ হাজার টাকা চুরি হয়। স্থানীয়রা হুমায়নকে সন্দেহ করে। এ নিয়ে মঙ্গলবার রাতে হুমায়নের সঙ্গে তর্ক হয়। একপর্যায়ে সে হুমকি দেয়। পরে ওই রাত থেকেই নিখোঁজ হন মা।’

বরগুনা সদর থানার ওসি আলী আহমেদ বলেন, ‘স্থানীয়রা বাড়ির পাশে নতুন ও কাঁচা মাটি দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বরিশাল থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) টিম এসেছে। তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তখন বিস্তারিত বলা যাবে।’