মায়ের পর মারা গেলো ১৮ মাসের সন্তানও, বাবা হাসপাতালে

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে আহত সাথী আক্তারের (২২) মৃত্যুর পর তার ১৮ মাসের সন্তান ফারহানাও মারা গেছে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (২০ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় তার মৃত্যু হয়।

এর আগে দুপুর ১২টায় বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের বাকেরগঞ্জ উপজেলার হেলিপ্যাড এলাকায় বাস ও অটোরিকশার সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই চার জনের মৃত্যু হয়। পরে শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে নেওয়ার পর সাথীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ নিয়ে দুর্ঘটনায় ছয় জনের মৃত্যু হলো। এছাড়া একই দুর্ঘটনায় আহত সাথীর স্বামী ফয়সাল হোসেন শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন আছেন।

শের-ই-বাংলা মেডিক্যালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের নার্স প্রভাতি বড়াল জানান, দুর্ঘটনায় মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পায় ফারহানা। মাথায় চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছিল। সাড়ে ৫টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন: বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ৫

নিহত অন্যরা হলেন—তানজিলা আক্তার (৩০), বাকেরগঞ্জ পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আমির চৌধুরী (৬০), পৌর এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাসিব খান (২৫) ও সোহাগ সিকদার (৩০)। 

মিনিবাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই চার জনের মৃত্যু হয়

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে পটুয়াখালী থেকে বরিশালগামী বিআরটিসির বাস হেলিপ্যাড এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে চালকসহ চার যাত্রী মারা যান। আহত মা ও শিশুকে উদ্ধার করে প্রথমে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে পাঠানো হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রেজাউল করিম সাথীকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

আহতদের বাকেরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে নিয়ে আসা অ্যাম্বুলেন্সের চালক মো. বাদল বলেন, ‘দুর্ঘটনার ঘটনার পর স্থানীয় যুবকদের সহায়তায় আহতদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অটোরিকশাচালকসহ চার জনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ সময় ফ্লোরে পড়েছিলেন সাথী ও তার সন্তান। চিকিৎসকদের অবহতি করলে দ্রুত শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে নিতে বলেন। কিন্তু পথেই ওই নারী মারা যান। এরপরও তাদের মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই। সেখানকার চিকিৎসকরা দেখেই বলে দেন, শিশুটির মা মারা গেছেন। তারপরও ইসিজি করে নিশ্চিত হওয়ার পর লাশ মর্গে পাঠানো হয়। শিশুটিকে দ্বিতীয় তলায় শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। বিকাল ৫টা ৪০মিনিটে জানতে পারি শিশুটিও মারা গেছে বলে খবর পেয়েছি।’

বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন মিলন জানান, সাথী আক্তারের বাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় বলে জানা গেছে। তার স্বামীও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তবে তিনি কোনও কথা বলতে পারছেন না। তাদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর বাসের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। তাদের শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা চলছে।