ভোলার ঘটনায় দুই কনস্টেবলের পর দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার

ভোলার দৌলতখান উপজেলায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে মেঘনা নদীতে পড়ে নিখোঁজ মো. নোমানের (২৭) সন্ধান শুক্রবার রাত পর্যন্ত মেলেনি। ওই যুবক উপজেলার চর খলিফা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আবুল কালাম বেপারীর ছেলে ও পাতারখাল মাছ ঘাটের শ্রমিক।

এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার দৌলতখান থানা পুলিশের গাড়ি চালক মো. রাসেল ও মো. সজীব নামের দুই কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে একই থানার এসআই স্বরূপ কান্তি পাল ও এএসআই মো. সোহেল রানাকে প্রত্যাহার করে ভোলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দৌলতখান থানার ওসি মো. জাকির হোসেন।

এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার পাতারখাল মাছঘাট এলাকায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন নোমান। ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস একটি ডুবুরি দল নোমানকে উদ্ধারের চেষ্টা শুক্রবার সমাপ্ত করেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে স্থানীয় শ্রমিক ইসমাইল, ফারুক, রুবেল ও নোমানসহ আরও ৭-৮ জন মেঘনা নদীর পাতার খাল মাছ ঘাট এলাকায় জুয়া খেলছিলেন। এ সময় দৌলতখান থানার এসআই স্বরূপ কান্তি পালের নেতৃত্বে কনস্টেবল রাসেল ও সজীব জুয়ার আসরে গিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করেন। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ফারুক, ইসমাইল, রুবেল ও নোমান মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দেন। এর মধ্যে ফারুক, ইসমাইল ও রুবেল সাঁতরে তীরে উঠে আসতে পারলেও নোমান ডুবে যান।

নদী থেকে তীরে ওঠা ফারুক ও রুবেল জানান, পুলিশের ধাওয়া খেয়ে তারা মেঘনা নদীতে পড়ে যান। এর মধ্যে তিন জন সাঁতরে তীরে উঠে যান। এরই মধ্যে পুলিশ সদস্যরা ওপর থেকে নোমানকে লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়তে থাকেন। তাদের ধারণা পুলিশের নিক্ষেপ করা ইট নোমানের মাথায় লেগেছে। যার কারণে নোমান সাঁতরে তীরে উঠতে পারেনি।

প্রত্যক্ষদর্শী দৌলতখান পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, নোমান নদীতে পড়ে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিল। এ সময় রিয়াজ নোমানকে নদী থেকে উদ্ধারের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ায় এসআই স্বরূপ কান্তি পাল তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন।

দৌলতখান ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মো. শাহাদাত হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা থেকে ডুবুরি দল তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সন্ধান না পাওয়ায় অভিযান সমাপ্ত করা হয়েছে।