পটুয়াখালী থেকে ছাড়েনি কোনও লঞ্চ, যাত্রীদের দুর্ভোগ

১০ দাবিতে দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছেন নৌযান শ্রমিকরা। এ অবস্থায় রবিবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে পটুয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি কোনও লঞ্চ। এতে বিপাকে পড়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের হাজারো মানুষজন।

ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক দেওয়াসহ ১০ দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ডাকেন নৌযান শ্রমিকরা। শনিবার রাত ১২টা থেকে নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকে এ কর্মবিরতি শুরু হয়।

পটুয়াখালী নদী বন্দরের কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, ‌‘রবিবার সকালে ঢাকা থেকে এমভি সুন্দরবন-১৪ এবং এমভি প্রিন্স আওলাদ যাত্রী নিয়ে পটুয়াখালী ঘাটে এসেছে। তবে বিকালে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি কোনও লঞ্চ। শ্রমিকদের দাবিগুলোর বিষয়ে সরকার, মালিকপক্ষ এবং শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। তবে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’

বিপাকে পড়েছেন লঞ্চযাত্রীরা, ফিরে গেছেন বাড়ি

এদিকে, লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। আগে থেকে না জানায় রবিবার বিকালে পটুয়াখালী লঞ্চ ঘাটে এসে অনেক যাত্রীকে ফিরে যেতে হয়েছে। 

পটুয়াখালী সদর উপজেলার বড়বিঘাই ইউনিয়নের বাসিন্দা লাইলি বেগম বলেন, ‘জরুরি কাজে ঢাকায় যেতে চেয়েছি। বিকালে লঞ্চ ঘটে এসে দেখি লঞ্চ চলাচল বন্ধ। এখন কি করবো, বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’ 

গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দি এলাকার বাসিন্দা জাকির মৃধা বলেন, ‘আমার নাতি নাজিফা (৪) অসুস্থ। তাকে ডা. দেখাতে ঢাকায় যেতে চেয়েছি। লঞ্চ ঘাটে আসার পর জানলাম ধর্মঘট চলছে। এখন অসুস্থ রোগী নিয়ে বিপাকে পড়েছি। বাড়ি ফিরে যাওয়া সম্ভব না, কষ্ট হলেও গাড়িতে যাবো।’ 

কর্মবিরতিতে অলস সময় পার করছেন লঞ্চের কর্মচারীরা

অপরদিকে, কর্মবিরতিতে অলস সময় পার করছেন লঞ্চের কর্মচারীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুন্দরবন-১৪ লঞ্চের এক কর্মচারী বলেন, ‘অনেকদিন ধরে মালিকপক্ষকে বেতন বাড়ানোর জন্য বলছি আমরা। তারা আমাদের কথার গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাই কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের বেতন না বাড়া পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখবো।’

পটুয়াখালী-টাকা নৌপথের লঞ্চ মাস্টারদের সভাপতি ও প্রিন্স আওলাদ-৭ লঞ্চের মাস্টার মো. ইসরাফিল বলেন, ‘আমাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে ঢাকায় আলোচনা চলছে। ঢাকা থেকে নির্দেশনা পেলেই লঞ্চ ছাড়া হবে। অন্যথায় কর্মবিরতি চলবে।’