খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, পানির সংকটে মরে যাচ্ছে তরমুজ গাছ

আড়াই একর জমিতে তরমুজের গাছ লাগিয়েছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বালিয়াতলী ইউনিয়নের বড় বালিয়াতলী গ্রামের কৃষক হাবিবুল্লাহ প্যাদা। কিন্তু পানির অভাবে মরে যাচ্ছে তরমুজ গাছ। এসব চারা মরে গেলে প্রায় তিন লাখ টাকা লোকসান হবে হাবিবুল্লাহর।

শুধু হাবিবুল্লাহ নন, ওই গ্রামের প্রায় ৪০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন আনোয়ার, জলিল মাতবর ও খলিল হাওলাদারসহ অর্ধশতাধিক কৃষক। পানির সংকটে মরে যাচ্ছে তাদের তরমুজ গাছ। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। অথচ তাদের কৃষিজমির পাশেই হাক্কার খাল। ওই খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন একই এলাকার কাশেম মিয়া ও নাসির উদ্দিন। তারা ওই খালের পানি ব্যবহার করতে না দেওয়ায় তরমুজ গাছ মরে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

পানির অভাবে মরে যাচ্ছে তরমুজ গাছ

কৃষকরা জানিয়েছেন, বড় বালিয়াতলী গ্রামের হাক্কার খালের পানি দিয়ে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন কৃষি উৎপাদন করে আসছেন কৃষকরা। এবার ওই খালে স্থানীয় প্রভাবশালী কাশেম ও নাসির বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন। তারা খাল থেকে পানি নিতে কৃষকদের বাধা দিচ্ছেন। এমনকি পানি নিতে গেলে কৃষকদের মারধরের হুমকি দিচ্ছেন। এ অবস্থায় পানির অভাবে মরে যাচ্ছে তরমুজ চারা। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দায়িত্বশীলদের কাছে দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।

গত বছর তরমুজ চাষ করে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা আয় করেছেন বলে জানালেন কৃষক হাবিবুল্লাহ প্যাদা। তিনি বলেন, ‌‘এ বছর অনেক খাটাখাটনি করে চারা রোপণ করেছি। এখন পানির অভাবে মরে যাচ্ছে। হাক্কার খাল থেকে পানি নিতে গেলে আমাদের মারধরের হুমকি দেন কাশেম ও নাসির।’

ইউএনওর কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনও প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষক আনোয়ার মিয়া। তিনি বলেন, ‘ইউএনওর কাছে অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। খাল থেকে পানি নিতে দেওয়া হচ্ছে না আমাদের। এখন বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি আমরা।’

এ বিষয়ে কাশেম ও নাসিরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি। দুজনকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি।

কৃষিজমির পাশেই হাক্কার খাল

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এআরএম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘পানির সংকটে কৃষকদের তরমুজ গাছের চারা মরে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তারা যাতে ওই খাল থেকে পানি নিতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হবে।’

তবে ওই খালটি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শংকর চন্দ্র বৈদ্য। তিনি বলেন, ‘খালটি তাদের নামে রেকর্ড হয়ে গেছে। কিন্তু সরকারি খাল কীভাবে তাদের নামে রেকর্ড হলো, তা বুঝতে পারছি না আমরা। খাল থেকে মাছ ধরে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে তাদের। কৃষকরা যাতে সেচ দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।’