বিষ মেশানো ভাত খাইয়ে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রী ও তার প্রেমিকের যাবজ্জীবন

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার কুড়ালিয়া গ্রামে পরিকল্পিতভাবে ভাতের সঙ্গে কীটনাশক মিশিয়ে স্বামীকে হত্যার ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ও তার প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই আদেশে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুড়ালিয়া গ্রামের নিহত সুশান্ত বৈরাগীর স্ত্রী সেবিকা মন্ডল ও তার প্রেমিক ঝালকাঠি জেলার জগদীশপুর এলাকার মিঠুন হালদার। রায় ঘোষণার সময় ওই নারী উপস্থিত থাকলেও মিঠুন অনুপস্থিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিচারক।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুল ইসলাম মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, ঘটনার দেড় বছর আগে নিহত সুশান্তের সঙ্গে পারিবারিকভাবে সেবিকার বিয়ে হয়। পরে ওই নারী মিঠুনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কলহ বাধে।

তিনি জানান, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৭ নভেম্বর রাতে ভাত খেতে চান সুশান্ত। এ সময় সেবিকা তাকে জানান, ভাত টেবিলে রাখা আছে। অর্ধেক ভাত খাওয়ার পর বমি করেন। তার অবস্থা খারাপ দেখে বাবা পল্লী চিকিৎসককে ডেকে আনেন। তিনি তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরদিন ৮ নভেম্বর সুশান্তকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ নভেম্বর রাতে মারা যান।

১০ নভেম্বর নিহতের ভাই সুনীল বৈরাগী বাদী হয়ে সেবিকা ও মিঠুনসহ চার জনকে অভিযুক্ত করে উজিরপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। থানার এসআই জাফর আহমদকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মামলায় সেবিকাকে গ্রেফতার করা হলে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে মিঠুনের পরামর্শে কীটনাশক ভাতের সঙ্গে মিশিয়ে স্বামীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।

পরে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হলে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আলী আকবর ওই দুজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেন। ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক রায় দেন।