পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হলেও ২ হত্যার মামলা হয়নি

বরিশালের মুলাদী উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর বালিয়াতলী গ্রামে দুই খুনের ঘটনায় বুধবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও মামলা হয়নি। তবে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫০ অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

বুধবার সকালে বাটামারা অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের এসআই বেল্লাল হোসেন মাতুব্বর মুলাদী থানায় মামলাটি করেন। মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে আজ বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- বাটামারা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আলম বেপারী ও জামাল সরদার।

এর আগে, সোমবার (১০ এপ্রিল) উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর বালিয়াতলী গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছিলেন। আহত হন আরেকজন। নিহতরা হলেন- আলমগীর কবিরাজ ও হেলাল বেপারী। আহত ব্যক্তির নাম কামাল বেপারী।

বাদী বলেন, ঘটনার দিন বিকালে উত্তর বালিয়াতলী গ্রামে পুলিশকে দেখামাত্র আসামিরা আক্রমণ চালায়। লাঠি এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। হামলায় কনস্টেবল নাঈম আহত হন। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে আহত কনস্টেবলের শর্টগান দিয়ে পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ওই সময় আসামিরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে জামাল সরদার নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাটামারা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আলম বেপারীকে সন্দেহকজনক আসামি হিসেবে আটক করে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আলম এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৫৫ জন নামধারী এবং অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়। গ্রেফতার দুই জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তবে এখনও দুই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোনও মামলা হয়নি। এ বিষয়ে মুলাদী থানার ওসি তুষার কুমার মন্ডল জানান, হেলাল ও আলমগীরের লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে গতকাল মঙ্গলবার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় উভয় পরিবার থেকে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের না হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুলিশ মামলা পরিচালনা করতে পারবে।

বাটামারা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মজিবুর রহমান সরদার জানান, বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কামালকে ফরিদপুরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে বিষয়টি কামালের পরিবার থেকে গোপন রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকালে মুলাদী থানার ওসি তুষার কুমার মন্ডলের নেতৃত্বে উত্তর বালিয়াতলী গ্রাম থেকে পাঁচ জনকে আটক করা হয়। এতে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে হামলা চালায়। এ সময় কামালকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন ওসি। কামাল গুলিবিদ্ধ হয়ে আত্মগোপনে যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ গ্রুপ লাঠিসোঁটা ও বোমা নিয়ে হামলা চালায়। এক পর্যায় হেলাল ও আলমগীর কবিরাজকে তুলে একটি বিলে নিয়ে যায়। সেখানে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে করা হয়।