মনোনয়ন পাওয়ার পরও দলের অনেকের সহযোগিতা পাইনি: খোকন সেরনিয়াবাত

সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়ার পরও বরিশাল আওয়ামী লীগের অনেকের সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন পাওয়ার পরও দলের অনেকের সহযোগিতা পাইনি। কিন্তু পেয়েছি নগরবাসীর ভালোবাসা। তারা আমাকে ভালো মানুষ হিসেবে গ্রহণ করেছে। যেখানে যাচ্ছি সেখানেই অফুরন্ত সাড়া পাচ্ছি। আমি তাদের সাড়াতে অভিভূত।’

মঙ্গলবার (৩০ মে) বিকালে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নৌকার মেয়র প্রার্থী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের আওয়ামী লীগের অভিভাবক কে। সমস্বরে উত্তর আসে শেখ হাসিনা।’ প্রতি উত্তরে খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, হ্যাঁ আমাদের অভিভাবক শেখ হাসিনা।’

বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবারও মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে দল থেকে সাদিক আব্দুল্লাহর বদলে খোকন সেরনিয়াবাতকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনি খোকন সেরনিয়াবাতের বড় ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছেলে।

খোকন সেরনিয়াবাতকে মনোনয়ন দেওয়ার পর থেকে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর অনুসারী বরিশাল জেলা ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ বিরোধিতা করে আসছেন বলে অভিযোগ। সর্বশেষ ২৬ মে আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে আগৈলঝাড়ার সেরালে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করা হলেও কেউ আসেনি খোকন সেরনিয়াবাতের প্রচার-প্রচারণায়।

খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, ‘এক সময় আমিও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সদস্য ছিলাম। আমি আমার বাবা (শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত) ও মামার (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) সান্নিধ্যে থেকেছি। তাদের স্বচ্ছ রাজনীতি দেখে অনেক কিছু শিখেছি। কিন্তু রাজনীতিতে আসিনি। এখন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে দিয়ে শুরু হলো পথচলা।’

নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন। আমি মেয়র হলে সিটি করপোরেশন থাকবে সবার জন্য উন্মুক্ত।’

তিনি বলেন, ‘বয়সের শেষ প্রান্তে আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব ও আদেশ দিয়েছেন তা আমি পালন করবো। আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করা হবে আত্মঘাতি।’

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘বরিশাল আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। কেউ কোনও স্বার্থ দেখবেন না। স্বার্থ দেখবেন দেশের। এ লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে খোকন সেরনিয়াবাতকে বিজয়ী করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘খোকন সেরনিয়াবাতের বিজয়ের উপর নির্ভর করছে আগামী সংসদ নির্বাচন। কাজেই গুরুত্ব দিয়ে খোকন সেরনিয়াবাতকে বিজয়ী করতে হবে। 

আব্দুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও খোকন সেরনিয়াবাতকে উদ্দেশ করে পরশ বলেন, ‘তারা একই পিতার সন্তান। তাদের রক্তও এক। সেই রক্ত ভাগ করা যায় না।’

পরশ বলেন, ‘যারা আব্দুর রব সেরনিয়াবাতকে ভালোবাসেন, যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব মানেন তারা সবকিছু ভুলে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন।’

কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাসিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম কবীর রাব্বানী চিনু, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন ও সাহিন সিকদার।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল জেলা ও মহানগর, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর থেকে কমিটির নেতারা। মতবিনিময় সভা শেষে শেখ ফজলে শামস পরশের নেতৃত্বে একটি র্যা লি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।