খড়ের গাদার পাশে মিললো নিখোঁজ বন্ধুর মাটিচাপা লাশ

পিরোজপুরের নেছারাবাদে নিখোঁজের তিন দিনের মাথায় হাসানুর রহমান অপু (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ীর মাটিচাপা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৭ অক্টোবর) উপজেলার সমুদয়কাঠী ইউনিয়নের দক্ষিণ সেহাংগল গ্রামে রুম্মান শেখ নামে এক ব্যক্তির খড়ের গাদার পাশে লাশটি পাওয়া যায়।

রুম্মান শেখ নিহত হাসানুর রহমান অপুর ব্যবসায়িক বন্ধু। অপু একই গ্রামের মৃত আব্দুর জব্বারের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে রুম্মানের মা, বোন ও ভাইয়ের মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। গ্রামবাসী অপুর হত্যায় জড়িত সন্দেহে রুম্মানের মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন। অভিযুক্ত রুম্মান পলাতক রয়েছে। সে একই গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে।

স্থানীয় আলী হোসেন নামে এক বৃদ্ধ জানান, অপু রুম্মানের ব্যবসায়িক বন্ধু। রুম্মানের কাছে দশ লাখের বেশি টাকা পেতো অপু। গত ৪ অক্টোবর সকালে রুম্মানের সঙ্গে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ সে। শনিবার সকালে স্থানীয়রা রুম্মানের বাড়ির পাশে সুপারি পাড়তে গিয়ে খড়ের গাদার পাশ থেকে পচা গন্ধ পাচ্ছিলেন। খুঁজতে গিয়ে তারা অপুর লাশ দেখতে পান। বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, অপু খুলনা শহরে বসবাস করতো। তার স্ত্রী থাকতো খুলনা শহরে। ব্যবসার কাজে অপু গ্রামের বাড়িতে থাকতো। গ্রামে রুম্মানের সঙ্গে সুপারির ব্যবসা ছিল তার। গত ৪ অক্টোবর রুম্মানের সঙ্গে বাসা থেকে বের হয়ে অপু আর বাসায় ফেরেনি। পরে ৫ অক্টোবর তার স্ত্রী খুলনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নম্বর ৩৫৬) করেন।

নিহতের চাচাতো ভাই মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই প্রতিবেশী রুম্মানের সঙ্গে ব্যবসা করতো। এজন্য রুম্মানকে কিছুদিন আগে আট লাখ টাকা দিয়েছিল। টাকাটা আজ দেবো কাল দেবো বলে আর ফেরত দেয়নি। গত ৪ অক্টোবর প্রতারক রুম্মান আমার ভাইকে ভুল বুঝিয়ে বাসা থেকে নিয়ে যায়। তারপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল।’

নেছারাবাদ-কাউখালি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাবিহা মেহবুবা বলেন, ‘অপু হত্যায় অভিযুক্ত সন্দেহে পলাতক রুম্মানের মা, বোন এবং ভাইয়ের মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

নেছারাবাদ থানার ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার বলেন, ‘রুম্মান কয়েক বছর আগে এ এলাকার মা-মেয়ে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি। ওই মামলায় জামিনে রয়েছে সে। পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ শফিউর রহমান ঘটনাস্থল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’